সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান আহমদকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া এএসআই আশেক-ই এলাহির ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। একইসঙ্গে এই মামলায় ২৪ অক্টোবর গ্রেপ্তার হওয়া বহিস্কৃত পুলিশ কনস্টেবল হারুনুর রশীদকে ২য় দফায় ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত মূখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমান তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইর পরিদর্শক মহিদুল ইসলাম জানান, বুধবার রাতে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার আদালতে তোলে আশেক-ই এলাহির ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপরদিকে, ৫ দিনের রিমান্ড শেষে হারুনুর রশীদকেও বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে তোলা হয়। আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজী না হওয়ায় দ্বিতীয় দফায় তার আরও ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিকাল ৩টায় কড়া নিরাপত্তায় আসামিদের আদালতে হাজির করে পিবিআই।

এরআগে বুধবার রাতে পুলিশ লাইন্স থেকে আশেক-ই এলাহিকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি বন্দরবাজার ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। রায়হান হত্যার পর তাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

১০ অক্টোবর রাতে সোর্সের তথ্যের ভিত্তিতে এএসআই আশেক আলীর নেতৃত্বেই রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয় বলে জানতে পেরেছে তদন্ত সংশ্লিস্টরা। ফাঁড়িতে আনার পর নির্যাতন চালানো হয় রায়হানের উপর। নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে ১১ অক্টোবর ভোরে তিনি মারা যান। গত ২৫ অক্টোবর পুলিশের সেই সোর্স সাইদুর রহমানকেও ৫৪ ধরায় গ্রেফতার করে পিবিআই।

এর আগে এই মামলায় পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুনুর রশীদকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়। ৮ দিনের রিমান্ড শেষে বুধবার টিটুকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর ভোরে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হন রায়হান আহমদ (৩৪) নামের এক যুবক। পরে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে তিনি মারা যান। রায়হান সিলেট নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরীর রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে কাজ করতেন।

এই ঘটনায় ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হেফাজতে মৃত্যু আইনে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী।

এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে রায়হানকে ফাঁড়িতে এনে নির্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় কমিটি। এই তদন্ত কমিটির সুপারিশে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটুচন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়।

স্ত্রীর দায়ের করা মামলাটির তদন্ত করছে পিবিআই। মামলার প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর পলাতক রয়েছেন বলে দাবি পুলিশের।