গাজীপুরে বাসা ভাড়ার বকেয়া টাকা নিয়ে বাকবিতন্ডার জেরে বাড়ির মালিকের শিশু কন্যাকে গলা কেটে মঙ্গলবার রাতে হত্যা করেছে এক ভাড়াটিয়া দম্পতি। এ ঘটনায় ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে একই রাতে এক অটোরিক্সা চালককে খুন করে তার রিক্সা ছিনিয়ে নিয়েছে ছিনতাইকারীরা।

কালিয়াকৈর থানার ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও নিহত শিশুর স্বজনরা জানান, প্রায় তিন মাস আগে কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর গ্রামের সাহেব আলীর বাসা মাসিক ৫ হাজার টাকা চুক্তিতে ভাড়া নেয় সুমন মিয়া। বগুড়া সদর উপজেলার ফুলবাড়ি উত্তরপাড়া এলাকার মৃত বিল্লাল হোসেনের ছেলে সুমন মিয়া তার স্ত্রী মিলি বেগমকে নিয়ে ওই ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকে। গত দুই দিন আগে গত মাসের (অক্টোবর) বকেয়া ভাড়া ৫ হাজার টাকা নিয়ে ভাড়াটিয়া সুমনের সঙ্গে বাড়ির মালিক সাহেব আলীর বাক বিতন্ডা হয়। এতে বাড়ির মালিকের উপর ক্ষিপ্ত হয় সুমন ও তার স্ত্রী মিলি বেগম। এর জেরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ির মালিকের শিশু মেয়ে লামিয়া আক্তার লিমুকে (১০) কৌশলে বাড়ির পাশের একটি পরিত্যাক্ত ঘরে ডেকে নিয়ে যায় ওই ভাড়াটিয়া দম্পতি। সেখানে তারা গলা কেটে শিশুটিকে হতা করে। পরে নিহতের লাশ পাশর্^বর্তী খালে ফেলে দেয় তারা। নিহত লিমু স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।

তারা জানান, দীর্ঘ সময়েও শিশু লিমুকে না পেয়ে তাকে খুঁজতে থাকে পরিবারের সদস্যরা। লিমুর সন্ধান না পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবগত করে স্বজনরা। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে স্বজনরা বাড়ির পাশর্^বর্তী খালের পানিতে নেমে লিমুর সন্ধান করতে থাকে। এসময় ভাড়াটিয়া সুমন খালের পানিতে নেমে লিমুর লাশের উপর দাঁড়িয়ে আশেপাশের বিভিন্নস্থানে স্বজনদেরকে খোঁজার পরামর্শ দিতে থাকে। তার আচরনে সন্দেহ হলে নিখোঁজ শিশুর স্বজনরা সুমনের কাছে গিয়ে তার পায়ের নীচে লিমুর লাশ দেখতে পায়। এসময় তাকে আটক করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত শিশুর লাশ উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত সুমন ও তার স্ত্রী মিলি বেগমকে আটক করে। ময়না তদন্তের জন্য নিহতের লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।

এদিকে জিএমপি’র কাশিমপুর থানার ওসি মাহবুবে খুদা ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন সুরাবাড়ি এলাকার শাহজাহান ভুঁইয়া মেমোরিয়াল স্কুলের পাশে মঙ্গলবার রাতে এক অটোরিক্সা চালক শাকিলের (২০) মাথায় আঘাত করে তার অটোরিক্সাটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয়রা গুরুতর আহত সাকিলকে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় শরীফ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে আশংকাজনক অবস্থায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ২টার দিকে শাকিলকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। পুলিশ এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। নিহত শাকিল গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর থানার চরক কামাল এলাকার সাইদুল ইসলামের ছেলে। সে ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন ইউসুফ মার্কেট এলাকার ইউসুফের বাড়িতে ভাড়া থেকে এলাকায় অটোরিক্সা চালাতো। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।