প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে কর্মরত সংস্থা অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জীবন-জীবিকার উপর কোভিড-১৯ এর প্রভাব: গণমাধ্যমের ভূমিকা বিষয়ক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশন এর সহযোগিতায় আয়োজন করে। আয়োজক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা মূল মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে জানান, কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত, সুস্থ ও মৃত্যু সম্পর্কিত তথ্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কোনো পরিসংখ্যান থাকে না, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা করোনার কারণে সাধারণ চিকিৎসা সেবা পেতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে; বিশেষ চিকিৎসা সেবা যেমন-থেরাপি সেবাও নিতে পারছে না, করোনা বিষয়ক সেবা দিতে যে হটলাইন চালু রয়েছে তা সব ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি নিতে পারছে না, করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে; অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা থাকলেও তা সব ধরনের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর উপযোগী নয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অনেকেই চাকুরি হারিয়েছেন, যারা ক্ষুদ্র ব্যবসার সাথে জড়িত তাদের অনেকেরই ব্যবসা পুঁজির অভাবে বন্ধ রয়েছে, প্রতিবন্ধী কার্ড না থাকার কারণে অনেক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি করোনাকালে সরকারি সুযোগ-সুবিধা যেমন-খাদ্য সহায়তা ও আর্থিক সহায়তা পাচ্ছে না, কোভিড-১৯ সংক্রান্ত সরকারি সকল তথ্য সকল ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জানতে পারছে না। সমস্যা উত্তরণে করণীয় সম্পর্কে বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আলাদা কর্মপরিকল্পনা করা, জরিপের আওতায় আসা সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী কার্ড দেবার ব্যবস্থা করা, আগামী বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ, গুরুতর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কোভিড-১৯ পরীক্ষার নমুনা বাসা থেকে সংগ্রহ, সেবা দিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য আলাদা হটলাইন চালু, কোভিড-১৯ বিষয়ে সরকার ৩৭টি গাইডলাইন ও নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছে তা সব ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অ্যাকসিসিবল করা, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় করা প্রয়োজন। এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি সমন্বয়ও খুবই জরুরি এবং কোভিড-১৯ বিষয়ে উন্নয়ন সংস্থা যেমন-বিশ^ব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, এআইআইবি কর্তৃক অর্থায়নকৃত সকল প্রকল্প প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিষয়টি অধিকতর গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা থেকে বাসস এর সিনিয়র রিপোর্টার ও বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামের মহাসচিব খায়রুজ্জামান কামাল, পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি কামাল আহমেদ সিদ্দিকী, যায়যায় দিনের আরিফ আহমেদ সিদ্দিকী, বিজয়টিভির প্রবীর সাহা, আমাদের সময়ের সুশান্ত কুমার সরকার, বান্দরবান, পাবনা, রংপুর, ধামরাই থেকে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ এবং প্রতীক মহিলা ও শিশু সংস্থা, প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থা ও রংধনু জেলা প্রতিবন্ধী অধিকার সংস্থার নির্বাহী প্রধানগণ এই ভার্চুয়াল সভায় অংশ গ্রহন করেন। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের মধ্যে পাবনা প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি কামাল আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, অনেক সাংবাদিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বিষয়ক আইন, নীতিমালা, কর্মপরিকল্পনা ইত্যাদি বিষয় জানেন না। তাই সাংবাদিকদের প্রতিবন্ধিত ইস্যুতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং স্থানীয় ডিপিও গুলোর সঙ্গে সাংবাদিকদের সম্পর্ক উন্নয়ন করা একান্ত প্রয়োজন। অন্যরা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ধরণ, লিঙ্গ, স্থান এবং ভাষা ইত্যাদি বিবেচনায় পরিকল্পনা গ্রহণ, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উন্নয়নে সকলের সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণ, সেবার বিষয়ে অডিট করা, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কমিটির কার্যকারিতা বৃদ্ধি, বাজেট বরাদ্দ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা, কুসংস্তার দূরীকরণে ধর্মীয় উপসনালয়ের মাধ্যমে প্রচারণা চালানো এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সংগঠনের সাথে সাংবাদিকদের সম্পৃক্তকরণ করা প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।