রাজধানীর ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর দোকান বরাদ্দ ও বৈধতা দেয়ার নামে টাকা ৩৪ কোটি টাকার অধিক আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলার পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মাদ সাঈদ খোকনসহ সাতজনের বিরুদ্ধে এই মামলাটি দায়ের করা হয়। আজ বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম আশেক ইমাম এ আদেশ দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের পেশকার মিজানুর রহমান নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার মামলাটি দায়ের হওয়ার পর একই বিচারক শুনানি নিয়ে আজ বুধবার আদেশের জন্য রাখেন। ওই মার্কেট মালিক সমিতি ও জাকের সুপার মার্কেট মালিক সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন এ মামলা দায়ের করেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সাবেক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী সরদার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাজেদ, জনৈক কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি সাঈদ খোকন, মো. ইউসুফ আলী সরদার, মাজেদ পরস্পর যোগসাজসে ফুলবাড়িয়া সিটি সুপার মার্কেট-২ এর ব্লক-এ, বি, সি মূল বিল্ডিয়ের মুল নকশা বহির্ভূত অংশ হিসাবে সেখানে স্থাপনা তৈরি করে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণা প্রদান করেন। ওই ঘোষণার পর ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে যোগাযোগ করলে মেয়র সাঈদ, কামরুল হাসান, হেলেনা আক্তার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ টাকা জমা দিলে দোকান বরাদ্দ দিবে বলে জানায়। আর যাদের নামে মূল মার্কেটে দোকান বরাদ্দ আছে তাদের ভুল বুঝিয়ে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বকির্ভূত এক্সটেনশন ব্লক-এ, বি, সি তে দোকান নিতে বাধ্য করা হয়। বকির্ভূত এক্সটেনশন ব্লক-এ, বি, সি তে দোকান না নিলে মূল মার্কেটের দোকান মালিকদের দোকানের বরাদ্দ বাতিল করবে এবং তালা লাগিয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করা হয়।

মামলায় আরও বলা হয়, তৎকালীন মেয়র সাঈদ খোকন, ইউসুফ আলী সরদার ও মাজেদসহ অন্যন্যা আসামিগণ অর্থ আত্মসাৎ ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবেম পে-অর্ডার এবং নগদে গ্রহণ করে নকশা বর্হিভূত দোকান বরাদ্দ করেন। বাদী মার্কেট সমতির সভাপতি থেকে অবৈধ বরাদ্দে বাধা দিলেও আসামিরা বাদীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়। আসামিদের পালিত সন্ত্রাসীদের দিয়ে তাকে প্রাণনাশের চেষ্টাও করা হয়।

পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট আসামি ইউসুফ আলী সরদার, আতিকুর রহমান স্বপন ও ওয়ালিদ বাদীকে রাজধানীর বনানীতে ডেকে নিয়ে অবৈধ দোকান বরাদ্দের বিষয়ে চুপ থাকতে বলেন। তা না হলে খুব খারাপ হবে বলে জানায়। তাই বাদী পরিবার পরিজনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে চুপ থকেন।

যেহেতু আসামিগণ অবৈধ দোকান বরাদ্দ বাবদ ক্ষুন্দ্র ব্যবসায়িকদের কাছে থেকে বিনা রশিদে বা কোনো প্রকার ডকুমেন্ট না দিয়েই কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন। তাই পরবর্তীতে বাদী ডকুমেন্ট রাখার জন্য বাদীর রিদি কন্সট্রাকশন সাপলাইয়ারসের উত্তরা ব্যাংকের ফুলবাড়িয়া শাখার হিসাবের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় চৌত্রিশ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হহাজজার ৫৭৫ টাকা প্রদান করেন।

পরবর্তীতে বাদীর ওই হিসাবের মধ্যেমে মেয়ের সাঈদ খোকনের কথামত শাহনেওয়াজ এন্টারপ্রাইজের স্টান্ডার্ড ব্যাংক হিসাবে ৭৫ লাখ টাকা প্রদান করেন। এরপর মেয়র সাইদ খোকনের কথামতো এক্সিম ব্যাংক পল্টন শাখায় ১২ কোটি ৫৫ লাখ, সাউথইস্ট ব্যাংক কর্পোরেট শাখায় ৪ কোটি ৩৯ লাভ ৭০ হাজার টাকা, যমুনা ব্যাংক দিলকুশা শাখায় ১ কোটি উত্তরা ব্যাংক ফুলবাড়িয়া শাখায় ১৬ কোটি টাকাসহ ৩৪ কোটি ৮৯ লঅখ ৭০ হাজার ৫৭৫ টাকা গ্রহণ করে পরস্পর যোগসাজসে আত্মসাৎ করেছেন।