গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১এ কারাবিধি লঙ্ঘন করে বন্দি হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমদের সঙ্গে এক নারীর একান্তে অবস্থানের অভিযোগ উঠেছে। কারা কর্মকর্তাদের কক্ষে তাদের একান্তে অবস্থানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ওঠে। অভিযুক্ত তুষার হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদের ভায়রা। তুষার আহমেদকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে ওই কারাগারের তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মো. মাইন উদ্দিন ভূইয়া তিনজনকে প্রত্যাহারের আদেশ দেন।

প্রত্যাহারকৃতরা হলেন, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর ডেপুটি জেলার গোলাম সাকলাইন, সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর মো. আব্দুল বারী ও সহকারী প্রধান কারারক্ষী মো. খলিলুর রহমান।

কারা অধিদপ্তরের দেয়া গত ১৮ জানুয়ারির এক আদেশনামায় দেখা গেছে, পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১ এর ডেপুটি জেলার গোলাম সাকলাইন, সার্জেন্ট ইন্সট্রাক্টর মো. আব্দুল বারী ও সহকারী প্রধান কারারক্ষী মো. খলিলুর রহমানকে প্রশাসনিক কারনে কাশিমপুর কারাগার পার্ট-১ থেকে প্রত্যাহার করে কারাঅধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। আদেশটি অনতিবিলম্বে কার্যকর করতেও বলা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারা সূত্র জানায়, গত ৬ জানুয়ারি কারাগারের প্রবেশের মাঝে কর্মকর্তাদের অফিস এলাকায় কালো রংয়ের জামা কাপড় পড়ে ঘুরাফেরা করেন তুষার আহমেদ। তিনি আসার কিছু সময় পর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রতœা রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইন সেখানে আসেন। এসময় বাইরে থেকে সালোয়ার কামিজ পড়া এক নারী সেখানে প্রবেশ করেন। দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে অপর দুই যুবকের সঙ্গে ওই নারী কারাগারের কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় প্রবেশ করেন। তাকে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। ওই নারী সেখানে প্রবেশ করার পর অফিস থেকে বেরিয়ে যান ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। আনুমানিক ১০ মিনিট পর কারাগারে বন্দি তুষার আহমদকে প্রবেশ করতে দেখা যায়। কারাগারের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণকৃত এ ভিডিও চিত্রটি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত হলে তা ভাইরাল হয়ে উঠে। এদিকে, করোনাকালীন কারাগারের বন্দিদের সঙ্গে কোনো দর্শনার্থীর সাক্ষাৎ ও নিষিদ্ধ রয়েছে।

গাজীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ওই ঘটনায় গত ১২ জানুয়ারি গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালামকে প্রধান করে গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উন্মে হাবিবা ফারজানা ও ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়।

এছাড়া ২১ জানুয়ারি অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক আবরার হোসেনকে প্রধান করে উপসচিব (সুরক্ষা বিভাগ) আবু সাঈদ মোল্লাহ ও ডিআইজি (ময়মনসিংহ বিভাগ) জাহাঙ্গীর কবিরকে সদস্য করে আরো একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক আবরার হোসেন জানান, প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সাত কর্মদিবস সময় দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিরা শাস্তি পাবেন।

গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল কালাম বলেন, কারাগারের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজটি আমরা দেখেছি। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে।