পাবনার ঈশ্বরদীতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এবং ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্বে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবর্ষন ও ছুরিকাঘাতে ৯ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা রাতুলের পায়ের রগ কেটে দিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার দুপুরে শহরের কলেজ গেট এর সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে কলেজ ছাত্রলীগের প্রস্তাবিত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক এসএম রাতুল হাসানের হাত-পাসহ শরিরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে এবং পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। তাকে গুরুতর আহতাবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে পাবনা ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত অন্যরা হলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনি, ছাত্রলীগের ৬ নং ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক শাকিল হোসেন, ছাত্রলীগ কর্মী শুভ, ইমরান, রুবেল, চমনসহ ৯জন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
এর আগে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনির মালিকানাধিন বিপু এন্টারপ্রাইজের দোকানে তালা মেরে দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের পর পুলিশ এসে ওই দোকানের তালা খুলে দেয়।
উভয় পক্ষের একাধিক নেতা-কর্মি, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, কলেজের সামনের একটি চায়ের দোকানে রাতুলসহ কয়েকজন আড্ডা দিচ্ছিল। সেখানে ছাত্রলীগ নেতা শাকিল হোসেন উপস্থিত হলে তাকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি রনিসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়।
রাতুলের বড় ভাই এসএম রুশদি হাসান মিলন জানান, ছাত্রলীগ সভাপতি রনির আঘাতে রাতুল রাস্তায় পড়ে গেলে তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। এসময় ছাত্রলীগ সভাপতি রনিও ছুরিকাহত হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনি বলেন, আধিপত্য বিস্তার করতে রাতুল, শুভ, রিপন, রুবেল, অবুজ ও চমনসহ আরো কয়েকজন আমার দোকানে তালা মেরে দেয়। খবর পেয়ে দোকানের সামনে এসে তাদের কাছে তালা মারার কারন জানতে চাইলে আমাকে ও শাকিলকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এ খবর পেয়ে অন্যান্যরা সেখানে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এসময় আমার ব্যাক্তিগত অফিস ও দুটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করা হয়।

গুরুতর আহত রাতুলের বড় ভাই এসএম রুশদি হাসান মিলন অভিযোগ করে বলেন, রনি দির্ঘদিন দোকানের ভাড়া না দেওয়ার কারনে তার দোকানে তালা মেরে দেওয়া হলে রনির নেতৃত্বে জীবন, লিটন, সালাম মোল্লা, সাগর, স্বপন ও জাহিদুলসহ তারা রাতুল ও তার সঙ্গে থাকা অন্য ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে। ছুরিকাঘাতে রাতুল রাস্তায় পড়ে গেলে তাকে উপর্যুপরি কুপিয়ে পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় দুই পক্ষের দুটি পাল্টাপাল্টি মামলার লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দেওয়া হয়েছে।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আসাদুজ্জামান সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীরা পালিয়ে গেছে, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। পরে এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনিসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।