গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছে। ঘটনার পর তদন্ত করে বোমা বিশেষজ্ঞ দল। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে ১১ সদস্যের একটি দল এ তদন্তকাজ শুরু করে। প্রাথমিক তদন্ত শেষ হলে তারা জানান, ১৯৭১ সালের (যুদ্ধকালীন সময়) কিংবা তার পূর্বের পরিত্যক্ত মর্টার সেল কাটতে গিয়ে বিস্ফোণের ঘটনা ঘটেছে। গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এ তথ্য জানান। আজ সকাল নয়টা থেকে বিস্ফোরণের ঘটা বাড়িতে তদন্ত চালায় ১১ সদস্যের দলটি।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস কনফারেন্সে পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে তদন্ত শেষে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের বোরহান উদ্দিনের পরিবারের সাথে কোনো জঙ্গি, সন্ত্রাসী, অন্তর্ঘাত বা নাশকতার কোনো সম্পর্ক নেই বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। ঢাকা থেকে বোমা বিশেষজ্ঞ টিম এই মর্টাল সেলের বিভিন্ন অংশ নিয়ে পরীক্ষা করছেন। পরীক্ষা থেকে আমরা বিস্তারিত জানাতে পারব।

গতকাল বুধবার বিকেলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামারদহ ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের বোরহান উদ্দিনের বাড়িতে যান তিন-চারজন অপরিচিত ব্যক্তি। এর কয়েক মিনিট পরই বিকট শব্দে বিস্ফোরণে ঘরের টিনের চাল উড়ে যায়। এ ঘটনায় তিনজন মারা যান। নিহতরা হলেন- কাসেম প্রধানের ছেলে বাড়ির মালিক বোরহান উদ্দিন (৩৬), একই গ্রামের মৃত কবির মিয়ার ছেলে অহেদুল মিয়া (৩৮) ও মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিড়াডাঙ্গা গ্রামের রানা মিয়া। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত বোরহান উদ্দিনের পরিবারের চার নারী ও অজ্ঞাত একজনসহ মোট পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।

গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় গতকাল বুধবার বোরহান উদ্দিনের বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনায় খায়রুজ্জামান (৩৬) নামে একজনকে আটক করেছে র‍্যাব। র‍্যাব জানায়, বগুড়ার মোকামতলা সুগার মিল এলাকায় একটি কনস্ট্রাকশন সাইট থেকে হাবীব নামে একজন একটি পরিত্যক্ত সেল উদ্ধার করে। তার ধারণা ছিল পরিত্যক্ত সেলটি একটি প্রাচীন আমলের ধাতব কন্টেনার (বোতল)। যার ভেতরে মূল্যবান মুদ্রা বা ধাতু পাওয়া যাবে। সেই সেলটি কাটতে গিয়েই বিস্ফোরণ ঘটেছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে র‍্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গতকাল বুধবার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় কামারদহ মেকুরাই নয়াপাড়া গ্রামে বোরহান উদ্দিনের (৩৮) বাড়িতে হঠাৎ বিকট আওয়াজে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। উক্ত বিস্ফোরণে বাড়িটির টিনের ঘর উড়ে যায় এবং তিনজন নিহত হয়।

বিস্ফোরণের ঘটনায় র‌্যাব ছায়া তদন্ত এবং গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। এ প্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুরের মাওনা থেকে র‌্যাবের গোয়েন্দা দল খায়রুজ্জামানকে র‌্যাবের হেফাজতে নেয়।