পাবনার মেয়ে আমেরিকা প্রবাসী আইরিন ইসলাম স্বামী, সন্তান ও মাসহ গুলিবৃদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ায় তার গ্রামের বাড়ি পাবনার শহরতলীর দোহার পাড়ায় চলছে শোকের মাতম।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ডালাসের এলেন সিটির এক বাড়ি থেকে পরিবারের ৬ সদস্যের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে সে দেশের পুলিশ।
নিহতরা হলেন, পাবনার দোহার পাড়ার মৃত আবুল মোসলেম শেখের স্ত্রী আলতাফুন নেসা (৭৭), তার মেয়ে আইরিন ইসলাম (৫৫), তার স্বামী তোওহিদুল ইসলাম (৫৬), মেয়ে পারভিন তোওহিদ (১৯) ও জমজ দুই ছেলে তানভীর তৌহিদ (২১) ও ফারহান তৌহিদ (১৯)।
সে দেশের পুলিশ এ মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য তাদের দুই ছেলেকে দায়ী করছেন।
মঙ্গলবার সকালে স্বজনদের মৃত্যুর সংবাদ পাবনার বাড়িতে পৌঁছানোর পর শুরু হয়েছে শোকের মাতম।
নিহতের স্বজনরা জানান, ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ফারহান, তানভীর। পরিবারেও নেই তেমন কোন সংকট। হতাশার কারণে পরিবারের সবাইকে হত্যা করে তারা আত্মহত্যা করেছে এমন কথা মানতে পারছেন না কেউ।
আকস্মিক এ মৃত্যুর খবরে সকাল থেকেই বাড়িতে ভীড় জমিয়েছেন স্বজন প্রতিবেশীরা। তাদের কান্নায় পরিবেশ ভারী হয়ে উঠেছে। এমন মৃত্যুকে রহস্যজনক বলে সুষ্ঠু তদন্তও দাবী করেছেন তারা।
নিহত আলতাফুন নেসার বড় ছেলে ও আইরিন ইসলামের ভাই আরিফুর রহমান আলফা জানান, আমার বোন কেবল তার পরিবারই নয়, আমাদেরও সবকিছু দেখভাল করতো। তার নিজের সংসারে কখনোই অশান্তি ছিলো না। ছেলে মেয়েরাও প্রতিভাবান, মেধাবী ও ভদ্র। তারা বাবা মায়ের পাশাপাশি সেখানে বেড়াতে যাওয়া তাদের নানীরও (আমার মা) যত্ন নিত। এমন ছেলেরা বাড়ির সবাইকে হত্যা করেছে তা কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছি না।
নিহত আলতাফুন নেসার ছোট ছেলে আবুল কালাম আজাদ হিরণ বলেন, মা প্রায় দুই বছর আগে আমেরীকায় বোনের বাড়িতে গিয়েছেন। করোনার কারণে আটকে গিয়েছিলেন। গত ১ এপ্রিল তার দেশে ফেরার কথা ছিল কিন্তু যার সাথে আসার কথা ছিল তিনি আসতে না পারায় ৭ এপ্রিল তার পাবনায় (বাড়ি) ফেরার কথা ছিলো। পরিবারের সবাই মিলে মাকে বিদায় জানাতে টেক্সাস ইউনিভার্সিটি থেকে আমার ভাগ্নি পারভিনকেও নিয়ে এসেছিল। কে জানত তাদের এমন মৃত্যু হবে।
হিরণ আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকারের নিকট আমার অনুরোধ বিষয়টি যেন সুষ্ঠু তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়।
পারিবারিক সুত্র জানান, প্রায় ২৫ বছর আগে পুরান ঢাকার তওহিদুল ইসলামের সাধে পাবনা শহরতলীর দোহারপাড়ার মেয়ে আইরিন ইসলামের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই আমেরীকা প্রবাসী এই দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে ছিল সুখী পরিবার। দু’বছর আগে পাবনা থেকে মা আলতাফুন নেসাকে ডালাসে নিয়ে যান মেয়ে আইরিন।স্বজনরা আরো জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।