‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা’ কথাটির সার্থকতা মিলছে বিলে বিলে। কোভিড-১৯ এর মহামারী বিশ্ব জুড়ে আতঙ্ক থাকলেও কৃষকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নওগাঁ ১১ উপজেলার বিলে বিলে চালিয়ে গেছে চাষাবাদের কার্যক্রম। এ ধারাবাহিকতায় জেলার উপজেলাগুলোর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবার আউশ ও আমন ক্ষেতে বোরোর ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। বাতাসে দুলছে সোনালী ধানের শীষ। বোরো ধানের বাম্পার ফলন দেখে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসির ঝিলিক। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খেতজুড়ে উঁকি দিচ্ছে সোনালী ধানের শীষ। ফসল ঘরে তোলার আশায় প্রতিটি কৃষক পরিবারের চোখে-মুখে সোনালী স্বপ্নের ছাপ। বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা কৃষকরা বেশ খুশি। কদিন পরেই সোনালী ধান কাটা শুরু করবে। কৃষক -কৃষাণীরা মনের আনন্দে ফসল ঘরে তুলবেন।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল ওয়াদুদ বলেন, কৃষি বিভাগের তদারকি, কৃষকদের সঠিক পরামর্শ ও দিকনির্দেশনার কারণে কৃষকরা শুরু থেকেই ইরি-বোরো ধানের সঠিক পরিচর্চা করেছেন। এ কারণে গত বছরের তুলনায় এবার ধান খুব ভালো হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন তিনি। তিনি আরো বলেন, এবছর বাম্পার ফলন হয়েছে। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ধূসর বিলের ফাঁকে ফাঁকে সবুজের বিপ্লব ঘটেছে। ধান গাছের বুক চিরে বেরিয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। প্রত্যেক গ্রামের কৃষকরা ক্ষেতের ধান কাটার অপেক্ষায় রয়েছেন। বাতাসে সোনালী ধানের শীষ দুলছে। অনেক কৃষক আবার বেশি ধান পাওয়ার আশায় জমিতে রাসায়নিক ও জৈব সার প্রয়োগ করছেন। কেউ আবার ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। তবে কখন নতুন ধান ঘরে তুলবেন এ স্বপ্নে বিভোর কৃষকরা।

আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া গ্রামের কৃষক মেহেদী বলেন, আমন ধানের দাম ভালো পেয়েছি আর সে কারণেই বোরো ধান চাষ করছি। আশা করি বাজারে ধানের ভালো দাম পাওয়া যাবে। কিন্তু কৃষি অফিস থেকে কৃষকের সরকারি বরাদ্দকৃত বীজ ,সার সময়মতো কৃষকরা পায়না। তিনি আরো বলেন, আশানুরূপ ফসল উৎপাদন হয়েছে, এখন আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি ঝড়, শিলাবৃষ্টি অর্থাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। কৃষিবান্ধব সরকার কৃষকদের প্রতি সুদৃষ্টি দেওয়ায় ফসলের দাম আশানুরূপ পাবে বলে কৃষকরা ধারণা করছেন। সেই সাথে এবছর ফসল ফলনের লক্ষ্যমাত্রা যা ধরা হয়েছে আশা করি তা ছাড়িয়ে যাবে। কৃষি অফিস থেকে জানা, শেখ হাসিনা সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। এ কারণে সময় মত আমন ধান চাষের জন্য কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার, বীজ কৃষি উপকরণ প্রদান করে একটি শক্তিশালী কৃষি জনগোষ্ঠী গড়ে তুলছেন। যে কারণে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দিকে ধাবিত হচ্ছে। কৃষি খাতকে শক্তিশালী করতে সরকারি প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। কৃষকদের ধান ঘরে তোলার জন্য সাধ্যমত পরামর্শ ও চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।