ঢাকা থেকে কুয়েত ও বাহরাইনে যাত্রীবাহী ফ্লাইট পরিচালনার জন্য দুটি এয়ারলাইন্সকে ‘বিশেষ বিবেচনায়’ অনুমতি দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান গতকাল শুক্রবার বিকালে এ তথ্য জানান।

মফিদুর রহমান বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে দেশে আটকে পড়া প্রবাসীদের কথা চিন্তা করে বেবিচক জাজিরা এয়ারওয়েজকে ঢাকা থেকে কুয়েত এবং গালফ এয়ারকে ঢাকা থেকে বাহরাইনে বিশেষ বিবেচনায় যাত্রীবাহী ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে। তিনি জানান, ২৫ থেকে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হলেও প্রয়োজনে ফ্লাইট পরিচালনার সময়সীমা বাড়ানো হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্স ও যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেওয়া নির্দেশনা পরিপালন করতে হবে বলেও জানান তিনি।

করোনা ভাইরাস মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত দেশে-বিদেশে সব ধরনের ফ্লাইট বন্ধ রাখার নির্দেশ আগে দিয়েছিল বেবিচক। তবে এই সময়ে

প্রবাসীদের আনা-নেওয়ার জন্য সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর, কাতার ও ওমানের বিশেষ ফ্লাইটগুলো আগের মতোই চালু ছিল। সর্বশেষ গত বুধবার থেকে বেবিচক চীনে চারটি এয়ারলাইন্সকে বিশেষ বিবেচনায় ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয়। ওই দিন থেকে সীমিত পরিসরে অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতিও দেওয়া হয়। তবে করোনা ভাইরাস মহামারীর সংক্রমণ প্রতিরোধে ওমান ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ২৪ এপ্রিল থেকে দেশটিতে কোনো ফ্লাইট চালাতে পারছে না বাংলাদেশ।

আজ চীন ও সিঙ্গাপুর যাবে ইউএস-বাংলার বিশেষ ফ্লাইট

বিশেষ ফ্লাইটের অনুমতি পাওয়ার পর আজ শনিবার চীনের গুয়াংজু ও সিঙ্গাপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করতে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। বেসরকারি বিমান পরিষেবা প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আজ রাত ১০টা ১০ মিনিটে গুয়াংজুর উদ্দেশে ইউএস-বাংলা এয়ারলান্সের বিশেষ ফ্লাইট ঢাকা থেকে উড্ডয়ন করবে। স্থানীয় সময় ভোর ৩টা ৫০ মিনিটে গুয়াংজু পৌঁছাবে এটি। পরে গুয়াংজু থেকে স্থানীয় সময় ভোর ৫টায় বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা হবে এবং ভোর ৭টায় বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে।

এ ছাড়া আজ রাত ১০টা ১০ মিনিটে প্রবাসীদের নিয়ে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে ইউএস-বাংলার আরেকটি বিশেষ ফ্লাইট। এটি সিঙ্গাপুর পৌঁছাবে স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে। সিঙ্গাপুর থেকে ভোর সাড়ে ৫টায় রওনা হয়ে বাংলাদেশ সময় পৌনে ৮টায় ঢাকায় নামবে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স জানায়, এই দুই রুটে সপ্তাহে একদিন শনিবার বিশেষ ফ্লাইট পরিচালিত হবে। তবে চীনে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য এয়ারলাইন্সটিকে কিছু শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

তারা জানিয়েছে, চীন থেকে আগত প্রত্যেককে সরকার নির্ধারিত হোটেল বা কোয়ারেন্টিন সেন্টারে নিজ খরচে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। ঢাকা থেকে চীনে যাওয়ার সময় মাঝারি আকারের এয়ারক্রাফটে যাত্রী ভরে ফ্লাইট পরিচালনা করা যাবে। তবে বড় আকারের এয়ারক্রাফটে (মডেলভেদে) সর্বোচ্চ ২৮০-৩২০ জন যাত্রী বহন করা যাবে। চীন থেকে ঢাকায় ফেরার সময় মাঝারি আকারের এয়ারক্রাফটে সর্বোচ্চ ১০০ জন এবং বড় আকারের ফ্লাইটে সর্বোচ্চ ১৫০ জন যাত্রী বহন করা যাবে। প্রতিটি ফ্লাইটের ইকোনমি ক্লাসের একটি সারি ও বিজনেস ক্লাসের একটি সিট ফাঁকা রাখতে বলা হয়েছে। ফ্লাইটে কোনো যাত্রীর করোনা সন্দেহ হলে তাকে ফাঁকা সিটে রাখার নির্দেশনা দিয়েছে বেবিচক।