লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার নিজ গড্ডিমারী এলাকায় ট্রাক্টর দিয়ে চাষাবাদ করে আমন ধান খেত নষ্ট করার অভিযোগ উঠেছে দুলাল হোসেন গং এর বিরুদ্ধে। এসময় বাধা দিলে উভয় গ্রুপের মারামারিতে ৮ জন গুরুতর আহত হয়। এদের মধ্যে বাবু নামে একজনের অবস্থা আশংকাজনক হলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে হয়। সোমবার (১০ মে) বেলা দেড়টার দিকে উপজেলার নিজ গড্ডিমারী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাতে সোহরাব আলী বাদী হয়ে দুলাল হোসেনসহ ২২ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার নিজ গড্ডিমারী এলাকায় ইতিপূর্বে প্রতিবেশী আবুল হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪৮) ও তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস নামীয় মধ্য গড্ডিমারী এলাকার ১ একর ২০ শতাংশ জমি সাব কবলা মুলে ক্রয় করেন ভোগ দখল করেন ঐ এলাকার মৃত ইদ্রিস আলীর ছেলে সোহরাব আলী (৪৮) ও তার ছোট ভাই আরমান আলী (৪২)।
ঐ জমি নিয়ে আসামীদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হলে সহকারী জজ আদাল লালমনিরহাটে ৬৭/২০০৫ নং মামলা করেন সোহরাব আলী ও তার ভাই। আদালত বাদী বিবাদীর কাগজ পর্যালোচনা করে সেই মামলায় সোহরাব আলী ও তার ভাইয়ের পক্ষে রায় দিয়ে গত ৩১/০১/২০১৩ তারিখের বিকাল ৪টার সময় লাল নিশানা টাঙ্গিয়ে উক্ত জমি তাদের হাতে বুঝে দিয়ে যায়। সেই থেকে তারা উক্ত জমি ভোগদখল করে আসছে। চলতি মৌসুমে উক্ত জমিতে সোহরাব আলী ও তার ভাই আমন ধানের বীজ রোপন করলে ধানের চারা গজিয়ে তা বড় হতে থাকে।
এদিকে উক্ত জমির বিরোধের জের ধরে আসামীগন পুর্ব পরিকল্পিতভাবে যোগসাজশ ও শলাপরামর্শ করতে থাকেন। এমতো অবস্থায় সোমবার (১০ মে) দুপুর দেড়টার দিকে তারা বেআইনি জনতায় দলবদ্ধ হয়ে হাতে বাঁশের লাঠি, ধারালো খোঁচা, খাপর ও ধারালো ছোড়াসহ উক্ত ধান ক্ষেত নষ্ট করে ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করতে থাকে। এসময় জমির মালিক সোহরাব আলীর স্ত্রী মর্জিনা বেগম (৪২) ছেলে মোবারক (৩২) ভাই আরমান আলী ও ভাতিজা বাবু (২৪) বাধা দিতে গেলে আসামী দুলাল হোসেনের হুকুমে অন্যান্য আসামীরা তাদেরকে লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে রক্তাক্ত করেন। খবর পেয়ে সোহরাব আলীসহ স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে আসামীরা পালিয়ে যায়। এসময় সোহরাব আলী স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। আহতদের মধ্যে জখমী বাবুর অবস্থা আশংকাজনক হলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়।
অপর দিকে ঐ সময়ে আসামী দুলাল হোসেন পক্ষের ইউসুফ আলী (২৫) সহ ৪ জন আহত হয় বলে জানা গেছে। তারাও বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পরে এ ঘটনায় সোমবার রাতে সোহরাব আলী বাদী হয়ে দুলাল হোসেনসহ ২২ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
এবিষয়ে কথা হলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আসামী পক্ষের ইউসুফ আলী ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে জানান, তারা জোড়পুর্বকভাবে আমাদের ক্ষেতের ভুট্টা তুলতে গেলে আমরা বাধা দেই। এতে তারা মারধর করে আমিসহ ৪ জনকে গুরুতর জখম করে।
হাতীবান্ধা থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) এরশাদুল আলমের সাথে এবিষয়ে কথা বলার জন্য মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।