ভ্যাট পরিশোধ ও ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়াসহ সরাসরি ভ্যাট সংক্রান্ত সেবা পেতে বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (বিআইএন) নিয়েছে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব, নেটফ্লিক্স ও মাইক্রোসফটের মতো আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সংস্থাগুলোকে সরাসরি এমন সুযোগ দেওয়ার পর গুগলই প্রথম ভ্যাট নিবন্ধন পেল।

মঙ্গলবার (২৫ মে) ভ্যাট অনলাইন প্রোজেক্টের প্রকল্প পরিচালক কাজী মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভ্যাট সেবা পেতে গুগল বিআইএন (বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর) রেজিস্ট্রেশনের পেতে আবেদন করে। যা আজ (মঙ্গলবার) অনুমোদন হয়েছে। এনবিআর থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর বিষয়ে কাজ শুরু করেছি। নির্দেশনা অনুসারে আমরা কাজ করে যাব। আশা করছি, অন্য প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানিগুলোও তাড়াতাড়ি বিআইএন গ্রহণ করবে।

এর আগে এনবিআর ভ্যাট আইনে সংস্থাগুলোর জন্য সরাসরি ভ্যাটের যাবতীয় সুবিধা দেওয়ার জন্য বিধি সংশোধন করে। তবে বাংলাদেশে স্থায়ী কোনো অফিস না থাকাসহ আরও কিছু জটিলতা রয়েছে, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে স্থায়ীভাবে সমাধান করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রযোজ্য ভ্যাট দেওয়ার ক্ষেত্রে ভ্যাট এজেন্ট নিয়োগের বাধ্যতামূলক বিধানটি আপাতত থাকছে। সমাধান হলে এজেন্ট নিয়োগের বিষয়টি বিকল্প সুযোগ হিসেবে বহাল থাকবে। বর্তমানে ভ্যাট আইন অনুসারে, ভ্যাট পরিশোধের ক্ষেত্রে স্থানীয় ভ্যাট এজেন্টরা দায়বদ্ধ।

ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন পেতে এবং ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য সংস্থাগুলো ২০১৯ সাল থেকে নানা ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। তাই ভ্যাট আইন অনুসারে সরাসরি এই সেবা পাওয়ার বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে দাবি ছিল। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে বিদেশি সংস্থাগুলোকে ভ্যাটের সেবা পেতে ভ্যাট এজেন্ট নিয়োগ করতে হয়েছিল। এ বিষয়ে সংস্থাগুলো এনবিআরকে বেশ কয়েকটি চিঠিও দিয়েছিল। যেখানে তারা ভ্যাট দেওয়ার বিষয়ে সরাসরি সেবা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশে স্থায়ী অফিস না থাকায় বিষয়টি এতদিন ঝুলে ছিল।

এর আগে ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব ও মাইক্রোসফটের মতো আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সংস্থা বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব কোম্পানিকে হয় বাংলাদেশে অফিস স্থাপন করতে হবে অথবা ভ্যাট এজেন্ট নিয়োগ দিতে হবে। এই এজেন্টরা ব্যবসা পরিচালনা বাবদ বাংলাদেশ সরকারকে রাজস্ব দেবে।

‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২’ আইন অনুযায়ী ফেসবুক, ইউটিউব, গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানকে মূসক নিবন্ধন নিতে হবে এবং তাদের বাংলাদেশে অফিস স্থাপন অথবা মূসক এজেন্ট নিয়োগ দিতে হবে। পরবর্তীতে ২০২০ সালের প্রথম দিকে আলাদা ভ্যাট নিবন্ধন নম্বরের আওতায় আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় এনবিআর।