‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষিত ছয় দফার চেতনাই ছিল বাঙালির মুক্তির মূলমন্ত্র। ছয় দফা শুধু বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ নয়, এটি সারাবিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের ঐতিহাসিক চেতনার আঁতুড়ঘর’- ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষ্যে সোমবার গাজীপুরস্থ ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান এ কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, ১৯৬৬ সালের ৭ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ছয় দফা আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও অবিস্মরণীয়। তিনি ছয় দফা দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও বৈষম্যের নীতির বিরুদ্ধে ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি লাহোরে তৎকালীন পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সব বিরোধী রাজনৈতিক দলের ডাকা জাতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। এরপর ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ফিরে এসব দাবির পক্ষে দেশব্যাপী প্রচারাভিযান শুরু করেন তিনি।

উপাচার্য হাবিবুর রহমান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলার শহর-গ্রাম তথা প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে জনগণের সামনে ছয় দফার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। বাংলার জনগণ এ সব দাবির প্রতি স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানায়। ছয় দফা হয়ে ওঠে পূর্ব বাংলার শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির সনদ। এমন পরিস্থিতিতে আইয়ুব খানের স্বৈরাচারী সরকার ১৯৬৬ সালের ৮ মে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ মানুষ রাজপথে নেমে আসে। জনগণের বিক্ষোভ ৭ জুন নতুন মাত্রা পায়। আওয়ামী লীগের ডাকা হরতাল কর্মসূচি পালনকালে পুলিশ ও ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালায়। এতে শহীদ হন মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন। ওই ঘটনায় দাবানলের মতো সারা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলনের পথ ধরেই ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পথে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

ডুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. হাবিবুর রহমান ঐতিহাসিক ৭ জুনসহ স্বাধীনতা সংগ্রামের সব শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এছাড়া তিনি সকলকে অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ করে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও দর্শনকে লালন করে দেশপ্রেমের মন্ত্রে উজ্জ্বীবিত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত রাষ্ট্র গড়ার আহ্বান জানান।