গাজীপুরের শিববাড়ি হতে ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমান বন্দর পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থবির পড়েছে। মানুষের দূর্ভোগ চরমে পৌছেছে। ওই পথে যাত্রীদের আধা ঘন্টা পথ পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌছতে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকা পড়ে গাড়িতে বসে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এনিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহের ওই পথে চলাচলকারী যাত্রীদের ক্ষোভও বাড়ছিল। জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে আগামী রবিবার থেকে ঢাকা-গাজীপুর-ঢাকা রেল সড়কে বিশেষ ট্রেন চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন ঘোষণার কথা জানান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।

জানা গেছে, দেশের উত্তরাঞ্চলের ৩৭টি জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক ও রেলপথের একমাত্র যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম গাজীপুর জেলা। এ জেলা হয়ে প্রতিদিন সড়ক ও রেলপথে লাখ লাখ মানুষ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়ত করে। তাই ঢাকার সঙ্গে গাজীপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর ও মানুষের ভোগান্তি কমানোর লক্ষ্যে দেশে প্রথমবারের মতো বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) চালুর উদ্যোগ নেয় সরকার। এ উদ্দ্যোগকে বাস্তবায়ন করতে ২০১২ সালে বিআরটি প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের শিববাড়ি হতে ঢাকার হযরত শাহজালাল বিমান বন্দর পর্যন্ত কাজ শুরু হলেও সঠিক সময়ে কাজ সম্পন্ন হয়নি। প্রকল্পের কাজের খোঁড়াখুঁড়ির কারণে মহাসড়কের প্রায় সব অংশেই সৃষ্টি হয়েছে গর্ত ও খানাখন্দ। পানি নিষ্কাশণ ব্যাবস্থায় প্রতিবন্ধকতা তৈরী হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধ হয়ে মহাসড়কের বিভিন্নস্থান ডুবে যায়। ফলে ওই পথে ঝুকি নিয়ে ধীর গতিতে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে সৃষ্ট যানজটে আটকা পড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে ওই পথে যাত্রীদের আধা ঘন্টা পথ পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌছতে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকা পড়ে গাড়িতে বসে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এছাড়াও বিকল্প রাস্তাগুলোর কাজ একই সঙ্গে চলমান থাকায় সেইসব রাস্তাগুলো বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে জনদুর্ভোগের মাত্রা বেড়েছে সীমাহীন।

ফেসবুকে পোষ্টে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত রাস্তাটিকে যানজট মুক্ত করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিআরটি প্রজেক্ট আমাদেরকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন। কিন্তু ঠিকাদারদের ক্রমাগত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে অনেক বছর ধরে ধীর গতিতে কাজ করায় মানুষের দুর্ভোগের কোনো সীমা নেই, আবার যখন বর্ষাকাল আসে এই দুর্ভোগ কয়েকগুন বৃদ্ধি পায়।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, বিআরটি প্রজেক্টে দায়িত্ব পালনরত সচিব, পিডিসহ সকলকে প্রায় প্রতিদিনই কয়েকবার করে ফোন করছি যাতে টঙ্গী-গাজীপুরবাসীসহ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী প্রায় ৩৭টি জেলার মানুষদের এই দুর্ভোগের হাত থেকে দ্রুত রক্ষা করা যায়। সিটিকর্পোরেশন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা প্রশাসনসহ সবাই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন। উপরন্তু গাজীপুর যাওয়ার সকল বিকল্প রাস্তাগুলোর কাজ একসঙ্গে চলমান থাকায়, সেই রাস্তাগুলো বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে না পারায় এই দুর্ভোগটি যেন আরো বেড়ে গেছে।

তিনি আরো জানান, এই দূর্ভোগের হাত থেকে মানুষদের কিছুটা হলেও রক্ষা করতে রেলমন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলে আগামী রবিবার থেকে গাজীপুর থেকে টঙ্গী হয়ে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে টঙ্গী হয়ে গাজীপুর পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। মাননীয় রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন মহোদয়ের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে আমার পক্ষ থেকে ভবিষ্যতেও সকল ধরণের উন্নয়ন প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।