গত দু’দিন আগে স্বামী ও সন্তানকে নিয়ে রাজধানীর কদমতলীতে বাবার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন ২৪ বছর বয়সী মেহজাবিন মুন। গিয়েই তার ছোট বোন ২০ বছর বয়সী জান্নাতুলের সঙ্গে নিজ স্বামীর অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে বলে বাবা-মায়ের কাছে অভিযোগ করেন। এ নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় মেহজাবিনের। সেই জের ধরেই তিনি বাবা-মা, ছোট বোনকে নারকীয়ভাবে হত্যা শেষে ৯৯৯ এ কল দিয়ে নিজেই হত্যার করার কথা জানান। কেবল তা’ই নয়, নিজ স্বামী ও মেয়েকেও হত্যার উদ্দেশ্যে গুরুতর জখম করেছেন এই হিংস্র নারী।

মেহজাবিনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে পুলিশ বলছে, হত্যার উদ্দেশ্যে পরিবারের সকলকে কৌশলে ঘুমের ওষুধ খাইয়েছিলেন তিনি। ঘাতক মেহজাবিনের স্বামী ও মেয়ে এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।

পুলিশ বলছে, পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নারকীয় এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছেন মেহজাবিন মুন। ৯৯৯-এ তার ফোন পেয়ে কদমতলীর মুরাদপুর হাজী লাল মিয়া সরকার রোড এলাকা থেকে স্বামী, স্ত্রী ও মেয়ের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ওই বাসা থেকে মাসুদ রানা (৫০), তার স্ত্রী মৌসুমী ইসলাম (৪৫) এবং তাদের মেয়ে জান্নাতুল (২০) নামের ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হাসপাতালে যে দু’জনকে ভর্তি করা হয়েছে, তারা হলেন মেহজাবিন মুনের স্বামী শফিকুল ইসলাম ও তাদের ৫ বছর বয়সী মেয়ে মার্জান তাবাসসুম।

পুলিশের ধারণা, গতকাল শুক্রবার (১৮ জুন) দিনগত রাতে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দুর্বল করে তাদের গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। প্রত্যেকের গলায় দাগ রয়েছে।

এ বিষয়ে কদমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জামাল উদ্দিন মীর বলেন, এ ঘটনায় ওই পরিবারের সদস্য মেহজাবিনকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। ৩ জনের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষেই এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেয়া যাবে। তবে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে- বিষ, নেশাজাতীয় দ্রব্য কিংবা ঘুমের ওষুধ কৌশলে প্রয়োগ করানোর পর দুর্বল করে তাদের হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।’

অন্যদিকে ডিএমপি’র ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, ‘কেন ও কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে, তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। এর বেশি কিছু এখনই বলা যাচ্ছে না।’