টাঙ্গাইলের পর এবারে পাবনাতেও করোনা টিকা না দিয়ে এক মেডিক্যাল শিক্ষার্থীর শরীরে সিরিঞ্জ পুশের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি জানাজানির পর বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য ঘটনা ঘটার প্রায় ৬ ঘন্টায়ও কিছুই জানেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ। বুধবার দুপুর পৌনে ১২ টার দিকে ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালের টিকা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।

ওই শিক্ষার্থীর বাবা জানান, ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের এমবিবিএস শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ও দেশের স্বনামধন্য শিল্প গ্রুপ স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের সিনিয়র ম্যানেজার অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল হান্নানের মেয়ে সাবাহ মারিয়ম অন্তিকা করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেয়ার জন্য ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালের টিকা কেন্দ্রে গিয়ে সকালে লাইনে দাঁড়ান। বেলা পৌনে ১২ টার দিকে তাকে টিকা দেয়ার জন্য নির্ধারিত স্থানে বসানো হয়। এরপর সিরিঞ্জে ভ্যাকসিন না তুলে খালি সিরিঞ্জ তার শরীরে পুশ করেন।
মেডিকেল শিক্ষার্থী সাবাহ মারিয়ম অন্তিকার বাবা অ্যাডভোকেট আব্দুল হান্নান বলেন, ‘আমার মেয়ে ন¤্র ও শান্ত স্বভাবের। টিকা কেন্দ্রে কাউকে কিছু না বলে বাসায় এসে মোবাইল দিয়ে আমার কাছে কান্না শুরু করে। আমি জানতে চাইলে সে বলেন, টিকা ছাড়াই আমার শরীরে সিরিঞ্জ পুশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমি এই ঘটনার সাথে জড়িতদের চুড়ান্ত শাস্তি দাবী করছি। তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা জানাচ্ছি। তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টপ পায়োরিটি প্রোগ্রাম ‘সবার জন্য ভ্যাকসিন’ এমন অসৎ দায়িত্ব দ্বায়িত্বজ্ঞান স্বাস্থ্য সেবাকরীদের জন্য নসাৎ হচ্ছে। সরকারকে বিতর্কিত করছে। অবিলম্বে এই ঘটনার সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা হোক। প্রয়োজনে আমি উকিল নোটিশ করবো এবং আইনী ব্যবস্থা নেবো। তিনি সাংবাদিকদের কাছে এক ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে এ দাবী করেন।
টিকা কেন্দ্রে কোন নার্স দায়িত্বে ছিলেন এ তথ্য জানতে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ছুটিতে আছি। ভারপ্রাপ্ত আরএমও জাহিদের সাথে যোগাযোগ করেন। ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা. জাহিদকে মোবাইল ফোনে ( ০১৭৫১-৮২১৫৭২) নম্বরে সাংবাদিকরা একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. কেএম আবু জাফর বলেন, দুপুর ৩ টা পর্যন্ত আমি হাসপাতালেই ছিলাম। এ ধরণের কোন ঘটনা আমার কানে আসেনি বা আমাকে কেউ জানায়নি। এইমাত্র আপনার মুখেই জানতে পারলাম। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে এবং প্রমাণিত হলে অবশ্যই দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। আপনার কাছ থেকে জানলাম। খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি।
জেলা প্রশাসক বিশ^াস রাসেল হোসেন বলেন, এ ধরণের কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি, আমি বিষয়টি জ্ঞাত নই।