কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে গত বৃহস্পতিবারের হামলার ঘটনার বিবরণ দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবে গেট দিয়ে ঢোকার সময় হামলাকারী তল্লাশি করার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলেন। এসময় তার পোশাকের নিচে ছিল ২৫ পাউন্ড বা প্রায় সাড়ে ১১ কেজি ওজনের বিস্ফোরক।

মার্কিন কর্মকর্তারা জানান, তল্লাশি শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটান ওই হামলাকারী। আত্মঘাতী হামলায় সাধারণত যে ধরনের বোমা ব্যবহৃত হয়, এটি ছিল তার চেয়ে অনেক বড়। বিস্ফোরণ ঘটানোর সঙ্গে সঙ্গেই হামলাকারী মারা যান। ওই বিস্ফোরণে এ পর্যন্ত ১৭০ জন মারা গেছেন। হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ জন সেনাও রয়েছেন।

পেন্টাগনের কর্মকর্তারা বলছেন, বৃহস্পতিবার আবে গেটে যে হামলার ঘটনা ঘটে, তা নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে। তারা ঘটনাগুলো একের পর এক সাজিয়ে তথ্য তুলে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বোঝার চেষ্টা করছেন, সে সময় আসলে ঠিক কী ঘটেছিল।

এ ক্ষেত্রে তিনটি প্রশ্ন ভাবাচ্ছে পেন্টাগনের কর্মকর্তাদের। প্রথমত, নিরাপত্তাকর্মীরা এত কাছাকাছি ছিল কেন? দ্বিতীয়ত, বিমানবন্দরের বাইরে থাকা তালেবানের তল্লাশিচৌকিতে বোমা হামলাকারী ধরা পড়লেন না কেন। আর তৃতীয়ত, তালেবানের তল্লাশিচৌকির কেউ হামলাকারীকে কৌশলে ছেড়ে দিয়েছিলেন কি না?

মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি বলেছেন, হামলার পর তারা দমে যাননি। যারা মার্কিন বাহিনীকে সহায়তা করেছেন এবং যারা দেশ ছাড়তে চান, এমন আফগানদের তারা সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবেন। কারণ, আফগানদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব পালনের জন্যই তারা বিমানবন্দরে রয়েছেন।

আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের আফগানিস্তান শাখা (আইএসকেপি) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা বলেছে, তাদের আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর অনুবাদক ও দোসরদের ওপর এ হামলা চালিয়েছে।

এদিকে, হামলার নিন্দা জানিয়ে এর প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে ১৫ সদস্যের এ পরিষদ এ কাজে সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।