প্রেমের ফাঁদে ফেলে গার্মেন্টস কর্মীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে মাহাবুব রহমান রাশেদ (২৮) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। এদিকে বিয়ের দাবিতে রাশেদের বাড়িতে গেলে ঐ রমণীকে বেধড়ক মারপিট করা হয় বলে জানা গেছে।

আর এ ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার কুচলীবাড়ি ইউনিয়নের পানবাড়ি গ্রামে।
রাশে ঐ এলাকার আক্তার হোসেনের ছেলে এবং উপজেলা আওয়ামিলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকের জ্যাঠাতো ভাই বলে জানা গেছে। এদিকে কালীগঞ্জ উপজেলার ঐ রমণী/মেয়েটি তালাকপ্রাপ্ত এক পুত্র সন্তানের জননী বলে জানা গেছে। সে ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করে।

জানা গেছে, গার্মেন্টস কর্মী ঐ মেয়েটির (২৫) সাথে ৩ বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক তৈরী হয় মাহবুব রহমান রাশেদের। রাশে মাঝেমধ্যে ঢাকায় গিয়ে ঐ রমণীর সাথে রাত্রি যাপন করতো। তারা দুজন বিয়ে করে শুখের সংসার করার সিদ্ধান্ত নিলে রাশেদ বিভিন্ন সময় নানান অজুহাত দেখিয়ে তার কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় বলে মেয়েটি জানান। চলতি মাসের ২৫ তারিখে মেয়েটিকে বিয়ে করে বাড়িতে তুলে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও রাশেদ তা না করে টালবাহানা শুরু করে। ফলে গত ২৭ আগষ্ট শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে মেয়েটি রাশেদের বাড়িতে গিয়ে উঠলে তাকে চাচাত ভাই আওয়ামিলীগ নেতা জুয়েলের ক্ষমতার জোরে বেধড়ক মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এসময় রাশেদ বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখে। পরে স্থানীয়রা মেয়েটিকে উদ্ধার করে আওয়ামিলীগ নেতা টুলুর বাড়িতে জমা রাখে। সেখান থেকে পরদিন শনিবার দুপুরে ঐ উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সাজেদা আক্তারের বাড়িতে নিয়ে মেয়েটির আত্মীয়স্বজন ডেকে মিমাংসার চেষ্টা করে।

গার্মেন্টস কর্মী মেয়েটি সাংবাদিককে জানান, রাশেদের সাথে আমার ৩ বছরের প্রেমের সম্পর্ক। সে মাঝেমধ্যে ঢাকায় গিয়ে আমার সঙ্গে রাত্রি যাপন করতো। তাকে আমি জীবনের চেয়েও বেশি ভালবাসি। রাশেদের বাড়িতে গেলে তার পরিবারের লোকজন আমাকে অনেক মারধোর করেছে। সে আমাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আমার উপায় নাই।

তিনি আরও জানান, রাশেদকে মনে প্রাণে ভালবাসী বলে জীবনের কষ্টার্জিত সব অর্থ তার হাতে তুলে দিয়েছি। মাস শেষে বেতনের অধিকাংশ টাকাই আমি তাকে দিতাম। সে আমার টাকা দিয়ে অনার্সে লেখাপড়া করেছে। বোনের সিজার, বাবার মায়ের চিকিৎসা, পুকুরে মাছ ছাড়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে মোটা অংকের টাকা আমার নিকট হতে নিয়েছে। এমনকি সার ও কীটনাশকের দোকানের জন্য তাকে এক লক্ষ টাকা দেই। যা দিয়ে সে দোকান দেয়। এভাবে সে আমার নিকট থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে আজ বিয়ে না করে টালবাহানা শুরু করছে। আমি তাকে না পেলে আত্মহত্যা করব বলে মেয়েটি জানান।

এবিষয়ে মাহবুব রহমান রাশেদের সাথে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
রাশেদের বাবা আক্তার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, মেয়েটি বিবাহিতা, তার একটা ছেলে আছে। কোনভাবেই তাকে আমার ছেলের বউ করতে পারবনা। পাটগ্রাম উপজেলার সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাজেদা আক্তার বলেন, মেয়েটি আসার পর থেকে ছেলেটির সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করা যাচ্ছেনা। তার ফোন বন্ধ। মেয়েটির দাবী রাশেদ তার নিকট হতে অনেক টাকা নিয়েছে। রাশেদের সাথে কথা বলা ছাড়া এবিষয়ে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছান যাচ্ছেনা। তাই মেয়েটির আত্মীয়স্বজনের হাতে তাকে তুলে দেয়া হয়েছে। আগামী বুধবার হাতীবান্ধায় বসে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।