যুক্তরাজ্যের লাল তালিকা থেকে বাংলাদেশের নাম তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। ব্রিটিশ ফরেন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসায় পাঁচ মাস পর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার লাল তালিকা থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ দেওয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য আবারও ইংল্যান্ডে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

ব্রিটিশ পরিবহনমন্ত্রী গ্র্যান্ট শ্যাপস গতকাল শুক্রবার নতুন যে ভ্রমণ নিয়ম ঘোষণা করেছেন, তাতে বাংলাদেশসহ মোট আটটি দেশকে উচ্চ ঝুঁকির ‘রেড লিস্ট’ থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বাকি সাতটি দেশ হলো- তুরস্ক, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, মিসর, শ্রীলংকা, কেনিয়া এবং ওমান। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর হবে বলে স্কাই নিউজের এক খবরে জানানো হয়েছে।

মহামারীর মধ্যে ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণে রেড, অ্যাম্বার ও গ্রিন- এই তিন রঙের তালিকা করে পৃথিবীর দেশগুলোকে ভাগ করেছিল ব্রিটিশ সরকার। নতুন নিয়মে ২২ সেপ্টেম্বরের পর রেড লিস্টে থাকবে ৫৪টি দেশ। এই তালিকা থেকে মুক্ত হয়ে আটটি দেশ যাবে অ্যাম্বার লিস্টে। অক্টোবর থেকে অ্যাম্বার লিস্ট বলে কিছু আর থাকবে না। রেড লিস্টের বাইরে বাকি সব গ্রিন। অর্থাৎ লাল তালিকায় থাকা ৫৪টি দেশ থেকে বিদেশিরা তখনো ইংল্যান্ডে যেতে পারবেন না। সেসব দেশ থেকে কোনো ব্রিটিশ নাগরিক দেশে ফিরলে ১০ দিনের কোয়ারেন্টিনের নিয়ম মানতে হবে। আর সবুজ তালিকার দেশগুলো থেকে ইংল্যান্ডে যেতে কোনো বাধা থাকবে না। ২২ সেপ্টেম্বর থেকে সবুজ তালিকার কোনো দেশ থেকে সেখানে যাওয়ার আগে কোভিড পরীক্ষা করার বাধ্যবাধকতাও থাকছে না। সেখানে গিয়েই তারা পরীক্ষা করাতে পারবেন।

ব্রিটেনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ৪ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ অ্যাম্বার লিস্টে থাকবে। ২২ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টা থেকে বাংলাদেশি ও ব্রিটিশ-বাংলাদেশিরা ইংল্যান্ডে ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে অ্যাম্বার লিস্টে থাকার সময়টায় ১০ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৯ এপ্রিল বাংলাদেশের নাম ঝুঁকিপূর্ণ দেশের লাল তালিকায় তুলেছিল যুক্তরাজ্য। ফলে বাংলাদেশি কোনো নাগরিকের বাংলাদেশ থেকে সেখানে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। এ পরিস্থিতিতে প্রায় সাত হাজার ব্রিটিশ-বাংলাদেশির আটকা পড়ায় রেড লিস্ট থেকে বাংলাদেশের নাম বাদ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। সদ্য বিদায়ী ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাবের সঙ্গে ৭ সেপ্টেম্বর এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশকে রেড লিস্ট থেকে সরানোর অনুরোধ জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন।