লালমনিরহাটের সদর উপজেলায় বিয়ের তিনপর নিখোঁজের ১০ দিন পর ঢাকার একটি নবনির্মিত ১০ তলা ভবন থেকে রুবেল মিয়া (২৩) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (১৫ জানুয়ারী) দুপুরে ঐ উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নের একটি কবর স্থানে নিহত রুবেল মিয়ার লাশ দাফন সম্পন্ন হয়। লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বাদী হয়ে সেখানেই একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত রুবেল মিয়া রাজপুর ইউনিয়নের খলাইঘাট গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে।

নিহতের পরিবার জানায়, চলতি মাসের ২ জানুয়ারী একই এলাকার আপিয়ার রহমানের মেয়ে সার্জিয়া খাতুনের সাথে আনুষ্ঠানিক ভাবে রুবেল মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের তিনদিন পর সকাল ১০ টার দিকে হঠাৎ করে নিখোঁজ হয় রুবেল। এর পর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অনেক খোজাখুজি করে তাকে না পেয়ে ঐদিন রাতে রুবেল মিয়ার বাবা নুরুল আমিন লালমনিরহাট সদর থানায় একটি সাধারন ডায়েরী (জিডি) করেন।

এদিকে স্থানীয় মাহফুজার রহমান নামে এক যুবক তার ফেসবুক আইডিতে রুবেল মিয়ার ছবিসহ নিখোঁজের একটি স্টাটাস দেন। স্টাটাসে রুবেলের খোঁজ পেতে মোবাইল নম্বরও উল্লেখ করেন তিনি। ঢাকায় উদ্ধার হওয়া সেই অজ্ঞাত লাশের পরিচয় পেতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃপক্ষ লালমনিরহাটের সেই যুবকের দেওয়া স্টাটাসে উল্লেখিত মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে নিখোঁজ ব্যক্তির খোজ খবর নেন এবং মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেন।

লাশের পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ময়নাতদন্ত শেষে নিহত রুবেলের পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করে পুলিশ।

রুবেল মিয়ার নববধূ সার্জিয়া খাতুন জানায়, বিয়ের তিনদিন পর অর্থাৎ ৫ জানুয়ারী আমার বাবার বাড়ি যাওয়ার কথা। তাই তার স্বামী তাকে বলেন আজতো তোমাদের যেতে হবে তুমি সব গুছিয়ে নাও আমি বাজার থেকে দাড়ি সেফ করে আসি দুপুরের পর আমরা রওয়ানা দিব। এই কথা বলে সে বাহিরে গেলে আর ফেরত আসেনি। আজ ১০দিন পর তার লাশ পেলাম।

নিহত রুবেলের বাবা জানায়, রুবেল আমার একমাত্র এবং খুব আদরের ছেলে। তাই খুব ধুমধাম করে ছেলের বিয়ে দিয়েছি। এই বিয়ের কারনেই তার ছেলেকে অপহরন করে ঢাকায় নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তিনি তার ছেলের বউ সার্জিয়া খাতুনের অন্য কোথাও সম্পর্ক থাকতে পারে এবং সেই ব্যাক্তিই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে দাবি করে পুলিশ প্রশাসনের নিকট তার ছেলে রুবেল হত্যার বিচার দাবি করেন।

রাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন মোফা জানান, বিয়ে সম্পর্কিত ঘটনার কারনেই হয়তো এই হত্যাকান্ড হতে পারে।

লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহা আলম জানান, কয়েকদিন আগে ওই যুবক নিখোঁজের একটি সাধারন ডায়েরী পেয়েছি। তাছাড়া ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ যেখান ৎেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে সেখানকার দারোয়ানকে গ্রেফতার করেছে বলে জানতে পেরেছি।