লালমনিরহাট জেলা শহরের যমুনা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অপারেশনের নামে ভুল চিকিৎসার দিয়ে মাহমুদা বেগম (২৫) নামে এক অন্তসত্বা নারীকে মৃত্যুর মুখে দাঁড় করানোর অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (২৬ জানুয়ারী) দুপুরে মাহমুদা বেগমের স্বামী জহুরুল ইসলাম বাদী হয়ে লালমনিরহাট সদর থানা ও সিভিল সার্জন বরাবরে যমুনা ক্লিনিকের ম্যানেজার আলহাজ আলী ও ডাঃ এম সাকিনা বেগম লাকীকে বিবাদী একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার হারাটি ইউনিয়নের নায়েকগর গ্রামের জহুরুল ইসলামের স্ত্রী মাহমুদা বেগম সন্তান প্রসবের জন্য গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধা ৬ টা দিকে লালমনিরহাট শহরের যমুনা ক্লিনিকে ভর্তি হন। হাসপাতালের ম্যানেজার আলহাজ মাহমুদা বেগমের স্বামীকে বলে আপনার স্ত্রীর সমস্যা আছে দুইটা অপারেশন করতে হবে এজন্য বেশি টাকা লাগবে। গ্রামের সহজ সরল জহুরুল বলেন যত টাকা লাগুক আপনি চিকিৎসা করেন। একই দিন ডাঃ সাকিনা বেগম লাকী সন্ধা ৭ টার দিকে অপারেশন করে ছেলে সন্তান প্রসব করান এবং ভালোমত ভিতরে পরিস্কার না করে সেলাই করে দেন। সেলাই পরবর্তী ব্যাথা ও পেট ফুলে থাকলে হাসপাতালের নার্স শুধু মাত্র সাপিসিটর দিয়ে রোগীকে বুঝান কোন সমস্যা নাই। এমনি ওষুধ খেতে থাকেন সব ঠিক হয়ে যাবে।

গত ২৩ ডিসেম্বর যমুনা ক্লিনিকের ম্যানেজার আলহাজ ১৩ হাজার টাকা নিয়ে রুগীকে ক্লিনিক থেকে ছাড়পত্র দেন। জহুরুল স্ত্রী মাহমুদা ও ছেলেকে নিয়ে বাড়ীতে চলে যান। বাড়ীতে নেওয়ার সাথে সাথে মাহমুদা বেগমের পেট ফুলে উঠে ও ব্যাথা অনুভব হলে স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক দেখান এবং ব্যাথা ও পেট ফুলা না কুমলে ২৬ ডিসেম্বর রাত ৮ দিকে আবারও যমুনা ক্লিনিকে নিয়ে আসেন।

ক্লিনিকের ম্যানেজার আলহাজ আলী মাহমুদা বেগমকে সাবসিটর ও বিভিন্ন ওষুধ দিয়ে ক্লিনিকে ২ দিন রাখেন। সমস্যা বেশি দেখা দিলে ৩ দিনের দিন ডাঃ সাকিনা বেগম লাকী এসে রুগীর অবস্থা খারাপ দেখে মাহমুদাকে রংপুর হাসপাতালে পাঠাতে বলেন।

অসহায় জহুরুল স্ত্রীকে বাঁচানোর জন্য রংপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। রংপুর সদর হাসপাতালের ডাঃ তাদের বলেন রুগীকে আবার অপারেশন করতে হবে। কারন নাড় প্যাচ ও ময়লা থাকায় ইনফেকশন হয়েছে। পরে ৩২ দিনের চিকিৎসা শেষে মাহমুদা বেগম সুস্থ্য হয়ে বাড়ী ফেরেন।

মাহমুদা বেগমের স্বামী জহুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, যমুনা ক্লিনিকে স্ত্রীকে নিয়ে গিয়ে খুব ভুল করেছি। প্রথমে বিভিন্ন টেষ্ট, ওষুধ ৬ হাজার টাকা, আবার ২টা অপারেশনের কথা বলে ১৩ হাজার টাকা নিয়েছে। ওরা রুগীর পকেট কাটে। আবার সেবাও ভাল দেয় না। নেই কোন ডাক্টার।

যমুনা ক্লিনিকের ম্যানেজার আলহাজ আলী বলেন, মাহমুদার অপারেশন করে ডাঃ সাকিনা বেগম লাকী সিজার করেছে। আমাদের কোন ভুল নেই। বাড়ীতে গিয়ে সমস্যা হয়েছে। তার দায় আমাদের না।

লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডাঃ নির্মলেন্দু রায় বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। খুব তারাতারি তদন্ত কমিটি তৈরী এবং তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।