শ্রীলঙ্কার পদত্যাগকারী প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসার সরকারি বাসভাবনে হামলা চালিয়েছে ক্ষুব্ধ জনতা। আর বাড়ির ভেতর থেকে গুলি আসার পর তারা বাড়িতে কিছু অংশে আগুন দিয়েছে। শ্রীলঙ্কায় গতকাল মহিন্দা পদত্যাগ করার কথা ঘোষণা করলেও সহিংসতা না থেমে বরং বেড়ে গেছে, অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে সেনাবাহিনী তলব করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসার পদত্যাগে দাবি করে আসছে। তবে তিনি পদত্যাগ না করার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন।

এএফপি জানায়, জনতা মহিন্দা রাজাপাকসার সরকারি বাড়ির প্রধান ফটক ভাঙতে চাইলে ভেতর থেকে গুলি হয়। এতে তারা আরো ক্ষুব্ধ হয়ে পার্ক করে রাখা একটি ট্রাকে আগুন দেয়। তবে তারা রাজাপাকসাদের পৈত্রিক বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে।

রাজাপাকসার পৈতৃক বাড়ি আগুন
বিক্ষোভকারীরা কেবল মহিন্দা রাজাপাকসার সরকারি বাড়িতে হামলা চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, তারা দ্বীপরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট গোতবায়া রাজাপাকসা এবং সদ্য প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেয়া মাহিন্দা রাজাপাসার পৈতৃক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাড়িটি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

আরেক এমপির বাড়ি জ্বালিয়ে দিলেন বিক্ষোভকারীরা

বিক্ষোভকারীরা সোমবার শাসকদলের আরো এক এমপি এবং এক সাবেক মন্ত্রীর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছেন। এচাড়া শাসকদলের এমপি সনৎ নিশান্তের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মারফত প্রকাশ্যে আসা ভিডিওতে মাউন্ট লাফিনিয়ায় দেশের প্রাক্তন মন্ত্রী জনসন ফার্নান্ডোর বাড়ি জ্বলতে দেখা গেছে।

গণরোষে নিহত শ্রীলঙ্কার শাসক দলের এমপি
সোমবার বিকেলে মাহিন্দা রাজাপাকসার ইস্তফার পর তার সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন অমরকীর্তি আতুকোহালা। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘণ্টা খানেক পরেই তার লাশ পাওয়া যায় বিক্ষোভ স্থল থেকে।

উল্লেখ্য, নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে গত মাসে দেশটি বিক্ষোভ শুরু হয়। বিশেষ করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ সঙ্কট, জ্বালানির দুষ্প্রাপ্যতায় নাজেহাল জনতা মাঠে নেমে আসে। সরকার জরুরি অবস্থা জারি, কারফিউ জারি করেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেনি।

সূত্র : আল জাজিরা, এএফপি, আনন্দবাজার পত্রিকা