গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, শ্রীলঙ্কার এমন পরিস্থিতি হবে, তা বিশেষজ্ঞরা কিছুদিন আগেও বলতে পারেননি। বাংলাদেশের ভেতরেও তুষের আগুন জ্বলছে। যেকোনো সময় আগুনের স্ফুলিঙ্গ জ্বলবে।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে যুব অধিকার পরিষদের ‘দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে’ আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

সমাবেশে গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর বলেন, সরকার গত ১৩ বছরে বাংলাদেশকে মুমূর্ষু রোগী বানিয়ে ফেলেছে। এখন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে দেশের চিকিৎসা দরকার।

দেশের এই মুহূর্তে ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন’ নামের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

নুরুল হক নুর বলেন, গত ছয় মাসের বাজার পরিস্থিতি বলছে, মাসে মাসে না, সপ্তাহে সপ্তাহে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে। সরকার ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি। তাই ভবিষ্যতে দ্রব্যমূল্য আরও বাড়বে। মজুতদারদের বিরুদ্ধে লোকদেখানো অভিযান চালানো হচ্ছে। মানুষ খেতে পারছে না। অথচ সরকার টাকা খরচ করে এলইডি স্ক্রিন লাগিয়ে উন্নয়নের প্রচার চালাচ্ছে।

দ্রব্যের দাম কমিয়ে জনগণকে স্বস্তি না দেওয়া হলে সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান নুর। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিকল্প শক্তির উত্থান ছাড়া জনগণের মুক্তি ও রাষ্ট্রের সংস্কার সম্ভব নয়।

সরকারকে উদ্দেশে নুরুল হক নুর বলেন, শ্রীলঙ্কা থেকে শিক্ষা নিন। শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ভালো ছিল। সীমাহীন দুর্নীতি তাদের কোথায় নিয়ে গেছে। বাংলাদেশের নাগরিকেরাও শ্রীলঙ্কার নাগরিকদের মতো পাল্টা আঘাত করতে পারে।

কর্মসূচিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৯৮ টাকা। সরকারি দলের লোকজন জনগণের সঙ্গে উপহাস করে বলেন, দাম ২০০ টাকা তো হয়নি।

এমন উপহাস আর কত দিন চলবে- প্রশ্ন রেখে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ কোনো কঠিন কাজ না। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি কমান, অপচয় কমান। মেগা প্রজেক্টের মায়া ছেড়ে জনগণের কথা ভাবেন।’

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, শ্রীলঙ্কার এমন পরিস্থিতি হবে, তা বিশেষজ্ঞরা কিছুদিন আগেও বলতে পারেননি। বাংলাদেশের ভেতরেও তুষের আগুন জ্বলছে। যেকোনো সময় আগুনের স্ফুলিঙ্গ জ্বলবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন দেন। সর্বদলীয় সরকার নিয়ে আলোচনায় বসেন।’

কর্মসূচিতে গণ অধিকার পরিষদ ও যুব অধিকার পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।