বিএনপি-জামাত জোট সরকারের দুঃশাসনের আমলে এক বৈরি সময়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে শিশু সংগঠনের রিহার্সেল করণ, আনন্দ মেলায় সকল শিশু সংগঠনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিশু-কিশোর-তরুণদের জাগ্রত ও উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠা হয় বাংলাদেশ শিশু সংগঠন ঐক্যজোট।

২০০১ সালে শিশু একাডেমি ভিত্তিক সম্মিলিত শিশু সগঠন জোট ও বাংলাদেশ শিশু সংগঠন ফেডারেশন নামে দুইটি শিশু সংগঠন ফেডারেশন ছিল। কিন্ত অতি পরিতাপের বিষয় সে সময় সংগঠনের তেমন কোন কার্যক্রম ছিলই না, বলা যায় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এমনই এক কঠিন পরিস্থিতিতে শিশু সংগঠক হানিফ খান, কিশোর থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা মেরাজ আহমেদের সঙ্গে সার্বজনিন নতুন একটি শিশু সংগঠন করার পরামর্শ করে। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠা হয় বাংলাদেশ শিশু সংগঠন ঐক্যজোট।

আজ ২০২২ সালে এসে বর্তমান সরকারের আমলে শক্তিশালী একটি প্লাটফর্মে দাঁড়িয়েছে। সেই প্লাটফর্মে দাঁড়িয়ে শিশু সংগঠন ঐক্যজোট শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুকে। জাতীর জনকের জন্ম শতবর্ষে শিশু সংগঠন গুলো আয়োজন করেছে ‌আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

শুক্রবার সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তিকলা মিলনায়তনে জমকালো আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর জীবন ইতিহাস নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর শুরু হয় দ্বিতীয় পর্ব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানের শুরুটা করেন উপস্থাপিকা উম্মে হাবিবা ইভা আর পরিচালনা করেন হানিফ খান। শুরুটা হলো বাঙালি জাতীর প্রাণের সেই ‌জয় বাংলা বাংলার জয় গানটি উপস্থাপনার মধ্যে দিয়ে। উপস্থাপিকার আহবানে শিশু সংগঠন ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দিলেন সংগঠন ঐক্যজোটের সহ-সভাপতি মো. আইনুল হাসান সোহেল। এরপর সভাপতি শাহ্ আলমের বক্তব্যের পর মঞ্চে বক্তব্য দিতে এলেন বিশেষ অতিথি বিবিএস গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার , বাংলাদেশ পথ নাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আখতার হোসেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক মো. সোহরাব হোসেন, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, সচিব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন।

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোচনা পর্বের শেষ দিকে বক্তব্য রাখলেন অনুষ্ঠানের উদ্বোধক সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ আর একেবারে শেষে প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম. বাহউদ্দিন নাছিম বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে জাতীর জনকের শতবর্ষ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভার সমাপ্তি ঘটে।

এরপরই শুরু হয় শেষ ও দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ৫২টি শিশু সংগঠনের ঐকেজোট থেকে আজ মঞ্চে উপস্থাপন করে ২১টি শিশু সংগঠন। স্পন্দন, ভিন্নধারা, মন্দিরা সাংস্কৃতিক পাঠশালা, মৈত্রী শিশুদল, বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা, সন্ধান লিটন থিয়েটার, রঙ্গপীট শিশুদল, সপ্তকলির আসর, ভিন্নধারা শিশু-কিশোর মেলা, সোনার বাংলা সাংস্কৃতিক ফোরাম, কিশোর থিয়েটার, স্বরতরঙ্গ আবৃত্তি ভুবন, আমার কুঁড়ি, বিন্দু শিশুদল, আমরা করবো জয়, মানিকগঞ্জ শিশু ফোরাম, ভোরের পাখি নৃত্যকলা কেন্দ্র, ঋদ্ধধূলি, অন্তরঙ্গ শিশুদল, মানব সাহায্য সংস্থা ও সৃষ্টিশীল ললিতকলা কেন্দ্র। প্রতিটি শিশু সংগঠন তারা তাদের নিজস্ব গান-নৃত্য উপস্থাপনা করে।

এর পর্বের পর আমন্ত্রিত সংগীত শিল্পী ফকির সাহাবুুদ্দিন, পথিক নবী, শাহানাজ বাবু, সানজিদা মঞ্জুরুল হ্যাপি, শিল্পী বিশ্বাস, মারুফ হোসেন, শবনম মুস্তারী প্রিয়াংকা ও আশা গান পরিবেশন করেন। শেষ দিকের আকর্ষণ ছিল আবৃত্তি পর্ব।

আমন্ত্রিত আবৃত্তি শিল্প অপর্ণা রায় ও পারভিন আফরোজা আইভীর আবৃত্তি উপস্থাপনার মধ্যে দিয়ে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষের বিশেষ আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।