বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ত্রাণ না পেয়ে বন্যাদুর্গত মানুষ অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর অবস্থায় দিন যাপন করছে। নিরন্ন, বুভূক্ষু মানুষ সরকারের কাছ থেকে ভিক্ষা চায় না, মালিকানার হিস্যা চায়, হিসাব চায়।

তিনি বলেন, ত্রাণের অভাবে বন্যার্ত মানুষ যখন দিশেহারা, সরকার তখন সেতু উদ্বোধনের নামে উৎসব করছে। আওয়ামী লীগ জনগণের টাকা দুর্নীতি-লুটপাট করে, ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, জনগণকে অভুক্ত রেখে দুর্ভোগ-দুর্দশার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।

রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলার বন্যাকবলিত হাওর অঞ্চল পরিদর্শন ও ইটনা উপজেলা সদর ও ধনপুর ইউনিয়নে দুর্গত মানুষের মাঝে বিএনপি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণকালে বন্যাকবলিত মানুষের সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।

মির্জা আব্বাস সকাল ১১টায় কিশোরগঞ্জ ঘাট থেকে ট্রলারযোগে হাওরের প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেন। বেলা ৩টায় ইটনার ধনপুর ও বিকেল ৫টায় সদরে ইটনা নতুনবাজার কলেজ মাঠে ত্রাণ বিতরণ করেন। ইটনা নতুনবাজার কলেজ মাঠে সকালে ত্রাণ বিতরণের জন্য সামিয়ানা টাঙানো হলে পুলিশ এসে বাধা দেয় ও সরঞ্জাম নিয়ে যায়। পরে বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নীচে প্রখর রোদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।

সমাবেশে মির্জা আব্বাস বলেন, একজন ব্যক্তির ইচ্ছা পূরণের জন্য হাওরের ভেতর দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা নির্মাণের ফলে ঢলের পানি নামতে পারছে না।

পদ্মাসেতু উদ্বোধনের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা অপচয়ের সমালোচনা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণের সরকার হলে জনগণের দুঃসময়ে এসব করতো না। ত্রাণের জন্য অপ্রতুল বরাদ্দ দিয়ে সেতু প্রাঙ্গণে আওয়ামী নেতাকর্মীদের জন্য ৯ কোটি টাকা ব্যয় করে একদিনের জন্য টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে, জেলায় জেলায় আলোকসজ্জা, আতশবাজি উৎসবের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে যা অমানবিক ও দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের সাথে উপহাস।

 

মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি জনগণের দল বলেই বিরোধীদলে থেকেও নেতাকর্মীরা নিজেদের তহবিল থেকে দুর্গত মানুষকে সহায়তা করছে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম বলেন, দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের প্রতি মমত্ববোধ থাকলে প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে পরিদর্শন না করে সরেজমিনে বন্যার্ত এলাকায় যেয়ে নিজ চোখে পরিস্থিতি অবলোকন করতেন, নিজ হাতে ত্রাণ বিতরণ করতেন। তিনি সিলেট সার্কিট হাউজে ত্রাণ বিতরণের নামে ফটোসেশন করেছেন।

তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনে হবে না। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না, ২০১৪ ও ১৮’র মত নির্বাচন করতেও দেবে না।

 

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম, অ্যাডভোকেট ওয়ারেস আলী মামুন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।

 

এ সময় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, তানভীর আহমেদ রবিন, হাজী মনির হোসেন, বিএনপি নেতা কমিশনার জুম্মন মিয়া, ফরহাদ হোসেন, আকবর হোসেন নান্টু, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ সভাপতি রুহুল হোসাইন, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী ইসরাইল মিয়া, নাজমুল আলম, আমিনুল ইসলাম আশফাকসহ বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।