লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় জমির দলিল লেখার সময় জালিয়াতি করার দায়ে দুজন দলিল লেখকের লাইসেন্স স্থগিতসহ একজনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে সাব রেজিট্রার। হাতীবান্ধা উপজেলা, সাব রেজিট্রি অফিসে গত ২১জুন এ ঘটনা ঘটে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এ বিষয়ে একটি চিঠি ইস্যু করে নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ

লাইসেন্স স্থগিতরা হলেন, ওই উপজেলার দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুল খালেক ও তার ছেলে রবিউল আলম (আলমগীর) এবং একই কমিটির সদস্য শরিফ মোল্লা।

জানা যায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে জনৈক্য মোবারক আলী হাতীবান্ধা সাব রেজিট্রি অফিসে এসে তার একটি জমি বিক্রির দলিল করে দেওয়ার জন্য দলিল লেখক আব্দুল খালেককে বলেন। দলিল লেখক আব্দুল খালেক সেই দলিল রেজিট্রি করার সময় ইচ্ছেকৃত খাজনা রশিদ পরিবর্তন করেন। যাহা সাব রেজিষ্ট্রারের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি তাৎক্ষনিক তার লাইসেন্স স্থগিত করে । সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারন দর্শানোর নোটিশ জারি করেন।

অন্যদিকে একই সময়ে খাজনা রশিদ টেম্পারিংয়ের দায়ে শরিফ মোল্লার লাইসেন্স স্থগিত করে নোটিশ জারি করে ৭ দিনের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব দিতে বলা হয়েছে। এর আগে গত ২২ নভেম্বরে দলিল টেম্পারিংয়ের কারনে দলিল লেখক রবিউল আলম আলমগীরের উপর দলিল মুসাবিদাকরন কার্যক্রম ও সাব রেজিট্রি অফিসে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়। এরপরও তাকে নিয়মিতভাবে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে বসে বিভিন্ন দলিলের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে দেখা যায়। এ বিষয়ে অন্যান্য দলিল লেখকরা প্রতিবাদ জানালেও তিনি কাউকে তোয়াক্কা না করেই বাবা সভাপতির ক্ষমতার জোরে তার কার্যক্রম পরিচালনা করেই চলছে।

এবিষয়ে কথা হলে দলিল লেখক নারায়ন রায় বলেন, সভাপতি খালেক মোক্তার ও তার ছেলে আলমগীর পুরো সাব রেজিট্রি অফিস দুর্নীতির আখড়ায় পরিনিত করে ফেলেছে। বাপ ছেলে ৪ জন মিলে তারা এই অফিসে দলিল লিখেন। আলমগীর মোক্তারের নামে শুরু থেকে অভিযোগের কোন শেষ নেই। এটা দোষ হলো মোক্তার সমিতির। আমরা প্রতিবাদ জানালেও তাদের কাছে আমরা অসহায়।

স্থগিত দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আব্দুল খালেক বলেন, দাতা ও গ্রহীতা যে কাগজ দেয় সেগুলো দিয়েই আমরা দলিল পার করি। পার্টি যেগুলো দেয় তা দিয়েই দলিল লেখা হয়। সেদিন দলিলে ভুল করে অন্য দাখিলা চলে গেছে। ৭ দিনের মধ্যেই আমি নোটিশের জবাব দিবো বলে জানিয়েছেন তিনি । শরিফ মোল্লা সংবাদ না করার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, আমি কাগজে কোন টেম্পারিং করিনি। সাব -রেজিষ্টার আজ এ এলাকায় আছে আগামীকাল তাকে আবার অন্য এলাকায় যেতে হবে। আমরা এলাকার লোক এলাকাতেই থাকবো। দ্রুতই নোটিশের জবাব দিবো তবে আমার কিছুই হবেনা বলে তিনি দাবী করেন। দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম অসুস্থতা জনিত কারণে ইন্ডিয়ায় থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা সাব-রেজিট্রার নাজমুল হক বলেন, আব্দুল খালেক দলিলে যা লিখেছিলো তার সাথে ডকুমেন্টেস এর গরমিল পাওয়ায় তাকে স্থগিত রাখা হয়েছে। শরিফ মোল্লা খাজনা রশিদ টেম্পারিং করেছিলো তাই তাকেও স্থগিত রেখে দু’জনকেই কারন দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে দলিল টেম্পারিং করার জন্য দলিল লেখক রবিউল আলম আলমগীরকে দলিল মুসাবিদাকরন কার্যক্রম ও অফিস প্রাঙ্গণে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।