সিলেট এমসি কলেজের শিক্ষার্থী স্মৃতি রানী দাসের আত্মহত্যার নেপথ্যে ছিল ব্ল্যাকমেইল। ঘটনার দুই মাস ১২ দিনের মাথায় তার মৃত্যুর জন্য এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট নগরের জালালাবাদ আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার শ্যামল দাস (২১) হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার সুধাংশু দাসের ছেলে।

জানা যায়, এ ঘটনায় নিজের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে শ্যামল দাস। সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আাদালতের বিচারক সাইফুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

সেই জবানবন্দির বরাত দিয়ে আদালত সূত্র ও পুলিশ জানায়, স্মৃতি রানী দাসের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার হ্যাক করে আপত্তিকর ছবি দিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেইল করে মানসিক চাপে ফেলে শ্যামল দাস। এভাবে তার কাছ থেকে টাকা আদায় করত।

তবে, এ ঘটনায় স্মৃতিরানী আত্মহত্যা করবে তা ভাবতে পারেনি। স্মৃতির ছবি পাঠিয়ে সে বিভিন্ন সময় ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিং (বার্তা) পাঠাতো। সর্বশেষ তাকে বিকাশে ২৫০০ টাকা পাঠিয়েছিল স্মৃতি।

বিকাশের নম্বরের সূত্র ধরেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

শাহপরান (র.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুল হক জানান, স্মৃতির বাবাকে বাদি করে আমরা আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা নিয়েছি। ওই মামলায় শ্যামল দাসকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে সে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে ম্যাজিস্ট্রেট তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তিনি জানান, ম্যাসেঞ্জার হ্যাক করে স্মৃতি রানী দাসের ব্যক্তিগত ছবি নিজের নিয়ন্ত্রণে নেয় শ্যামল দাস। এরপর স্মৃতি রানীকে মানসিক চাপে ফেলে টাকা আদায় করত। আত্মসম্মানের ভয়ে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে এমনটি ধারণা করা হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, স্মৃতির মোবাইল ফোনের লক খুলতে পারলে আরো তথ্য জানা যাবে। সেটি সিআইডির মাধ্যমে এক্সপার্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে। আপাতত পাঁচ দিনের এসএমএস আদান-প্রদানের তথ্য তদন্তকারী কর্মকর্তার সংগ্রহে রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ মে দুপুরে এমসি কলেজ ছাত্রী হোস্টেলের চার তলার ৪০৩ নম্বর কক্ষে সিলিং ফ্যানের সাথে স্মৃতি রানীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

তিনি হোস্টেলের তৃতীয় তলার ৩০৭ নম্বর কক্ষে থাকতেন। বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রামে। তার বাবার নাম যুগল কিশোর দাস। তিনি এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।