গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণের তালিকা তৈরীতে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় আওয়ামীলীগ নেতা এক ইউপি সদস্যকে বাজার থেকে তুলে নিয়ে বেধড়ক মারপিট ও ছুরিকাঘাত করেছে ওই ইউপি’র চেয়ারম্যানের লোকজন। গুরুতর আহত ইউপি সদস্য সোহরাব হোসেন সরকারকে (৪৭) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার উপজেলার রায়েদ ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত সোহরাব হোসেন সরকার ওই ইউপি’র ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য।

আহত ইউপি সদস্য ও রায়েদ ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সোহরাব হোসেন ও স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় হত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারের বরাদ্দকৃত ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণের তালিকা প্রস্তুতের কাজ করছিলেন ইউপি সদস্য সোহরাব হোসেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে রায়েদ ইউনিয়নের তার অধীনস্থ ১ নং ওয়ার্ডের সমস্ত কাগজপত্র সহকারী সচিবের কাছ থেকে চেয়ারম্যান শফিকুল হাকিম হিরণ মোল্লা নিজের কাছে নিয়ে নেন। এমনকি তার প্রদত্ত তালিকার লোকজন ব্যাপকহারে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যান নতুন করে নিজস্ব লোকজনকে তালিকাভুক্ত করেেছন বলে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। এ সংবাদ পেয়ে রবিবার সকালে তিনি সহকারী সচিবের কাছে এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে সহকারী সচিব তাকে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। এ সময় তিনি চেয়ারম্যানের কাছে তার দেওয়া তালিকাটি চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে অকথ্য গালিগালাজ শুরু করলে উভয়ের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তালিকা তৈরীতে অনিয়মের প্রতিবাদ করে সোহরাব পরিষদ থেকে বেরিয়ে পাশ্ববর্তী বাজারে চলে যান। এ ঘটনার পর চেয়ারম্যানের ভাগ্নের নেতৃত্বে ৮-১০ জন লোক পাশ^বর্তী বাজারে গিয়ে ইউপি সদস্য সোহরাবকে ধরে ইউনিয়ন পরিষদের বাউন্ডারির ভিতরে আনে। সেখানে এনে তারা সোহরাবে পিঠে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করে এলোপাথারি কিলঘুসি ও লাঠিসোটা দিয়ে মারপিট করতে থাকে। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে তাকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

এ বিষয়ে রায়েদ ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শফিকুল হাকিম হিরণ মোল্লা জানান, এ ঘটনার সঙ্গে তিনি ও তার ভাগ্নে রাহাত মোল্লা জড়িত নন। বরং জনগণের রোষানলে পড়ে মার খাওয়ার সময় সোহরাব হোসেনকে তিনি রক্ষা করেছেন।

কাপাসিয়া থানার ওসি এএফএম নাসিম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এলাকায় পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।