সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সদস্য আঁখি খাতুনের বাবার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এই দুই পুলিশ সদস্য হলেন শাহজাদপুর থানার এএসআই মামুনুর রশিদ ও কনস্টেবল আবু মুসা।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম মন্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে শাসানো ও হুমকির অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ওই দুজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এর পাশাপাশি বিষয়টি তদন্তের জন্য শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।

এর আগে বুধবার বিকালে আদালতের একটি নোটিশে স্বাক্ষর নিতে যান এএসআই মামুনুর রশিদ ও কনস্টেবল আবু মুসা। ওই সময় আঁখির বাবা স্বাক্ষর দিতে রাজি না হলে তার সঙ্গে এ দুই পুলিশ সদস্য ‘অসদাচারণ’ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার হলে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

এ বিষয়ে নারী সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের রক্ষণভাগের সদস্য আঁখি বলেন, সরকারিভাবে আমাকে দেওয়া জমির বিষয়ে একটি পেপার নিয়ে থানা পুলিশ গিয়ে আমার বাবাকে শাসিয়েছে। তারা একটি কাগজে সই করতে বলার পর বাবা নাজি না হলে থানায় নিয়ে যাবে বলেছে।

আঁখির বাবা আক্তার হোসেন বলেন, আমি কোনো মামলার বাদী বা আসামি নই। আমি পুলিশকে বলেছি- আপনারা ইউএনও মহোদয় বা ডিসি স্যারের সাথে কথা বলেন। তখন আমার সাথে তারা অসদাচারণ করেছে তারা। আর এক পুলিশ সদস্য আমাকে ধরে নিয়ে যাবে বলেছে।

এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে পুলিশ রাতে আঁখির বাড়িতে নোটিশ দিতে যায় পুলিশ। নোটিশ না নেওয়ায় পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। পরে ঘটনাটি জেনে তাৎক্ষণিকভাবে মীমাংসা করা হয়েছে।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ফুটবলার আঁখির জন্য এক নম্বর খাস খতিয়ানের একটি জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি মকরম প্রামাণিক নামে এক ব্যক্তি ওই জমির তার দখলে রয়েছে দাবি করে মামলা দায়ের করেন। তবে মামলায় তিনি ওই জমির মালিকানা দাবি করেননি। মামলার তফসিলে খতিয়ানও উল্লেখ করেননি। প্রকৃতপক্ষে আঁখিকে দেওয়া জমিটি এক নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত। যেটা এখনও আমাদের দখলে রয়েছে। আঁখির পরিবার যাতে ওই জমি না পায়, সে জন্য একটি চক্র এ মামলা দায়ের করেছে।

এর আগে আঁখির পরিবারকে একটি জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সেই জমির মালিকানা দাবি করে শাহজাদপুরের এক ব্যবসায়ী মামলা দায়ের করেন। পরে বিবাদমান জমির বরাদ্দ বাতিল করে এক নম্বর খাস খতিয়ানের পৃথক জমি বরাদ্দ দেয় স্থানীয় প্রশাসন।