সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়াম থেকে

সিলেটের মাটিতে এ আসর শুরু হওবার আগেও বাংলাদেশ দলের অিনায়ক নিগার সুলতানা ঘোষণা দিয়েছিলেন, সিলেট আমাদের হোম গ্রান্ড। এখানে এতো খেলেছি যে, সিলেটের গ্রাউন্ড নিয়ে বলা কিছু নেই।’ অথচ আজ নারী এশিয়অ কাপের আসরে সিলেটে সকালের দৃশ্যটা ছিল পুরোপুরি ভিন্ন। এতো দ্রুত বাংলাদেশ নারী দলের উইকেট পতন ঘটেছে যে, কিছু বোঝার উপায় ছিল না। কিন্তু ২০ ওভারের কোটা শেষ হবার আগে বৃষ্টি আপাতত রেহাই দিল অল আউট থেকে। ৫৮/৭, ১৭.৩ ওভার। বৃষ্টির পর রান খুব বেশি বাড়বে সেটা আশা কারছিল বোকামী। তাই স্কোর ৭০/৮, ২০ ওভার শেষে অলআউট হয়নি এটাই অনেক বড় কথা। আর হারটা কতটা আটকে রাখা যায়, সেটাই ছিল দেখার বিষয়। ১০ উইকেটে হারেনি, এটাই ছিল বড় সফলতা। ১২.২ ওভারেই ৭২/১ রান জমা করে ৪৬ বল না খেলে জয় তুলে পাক নারী দল ফাইনালে খেলার আগাম বার্তা দিয়ে গেল।

অথচ নিগারদের চেনা উইকেটে টস জিতে বল করতে নেমে ৯ উইকেটে জয় তুলে পাকিস্তান নারী দল নিগারদের বুঝিয়ে দিয়েছে কোথায় কোথায় সমস্যা। বাংলাদেশ টপ অর্ডারকে রান তোলা দূরে থাক, টিকে থাকতেই দেয়নি পাক বোলিং বাহিনী। নাকানি-চুবানি খাইয়ে ছেড়েছে পাক দলের ডায়না, সাদিয়া আর ওমাইমা। এথচ একই উইকেট, নিজেদের চেনা উইকেটে বাংলাদেশের সানজিদা, নাহিদা আর রিতু সকলেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। পাক দলের বোলাররা যেমন বল হাতে রান করতে দেয়নি, তেমনি ব্যাটাররা বাংলাদেশের সেরা বোলারদের তুলধূণ করে ছেড়েছে। উদাহরন- ইনিংসের ১ম ওভারে ৬ বলেই তুলে নেয় ১৩ রান! এতেই পরিষ্কার হয়ে যায় বাংলাদেশের মেয়েদের বোলিং যোগ্যতা। এটা পাক দলের ১৬তম মোকাবেলায় ১৫তম জয়।

পাক দলের দুই ওপেনিং ব্যাটার ৬ ওভার অবদি মাতা উচ্চু করেই খেলেছে। স্কোর বিনা উইকেটে ৪০/০! মুনিবা আলী আর সিদারা আমিন নিগার বাহিনীকে লজ্জাই দিয়েছে। আর ফিল্ডিং বলতে তো কিছুই ছিল না। সেটা কোন ভাবেই আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বলার সুযোগ নেই। যে কারণে ১০ ওভারেই পাক নারী দল স্কোর বোর্ডে জমা করে ৬০ রান!

অথচ একই উইকেটে বাংলাদেশের দলীয় ২ রানেই পর পর দুই ওপেনার বোল্ড আর ৩ রানের মাথায় ওয়ান ডাউনে নামে এলবি’র ফাঁদে কাটে গেলেন। ৩ রানে ৩ উইকেট, ওভার ৪.১ শেষ! হতবাক করা এক স্কোরের সামনে দাঁড়িয়ে,বিশ্বাস করতেই কষ্ট হচ্ছিল। ওপেনার শামিমা ১, ফারজানা ১, রুমানা ১ আর অধিনায়ক নিগারের সঙ্গে লতা মন্ডল লড়াই করে ১২ রান করে সেই এলবি’র ফাঁদে পা দিলেন। ৯.৫ ওভারে স্কোর ২৭/৪।

বাংলাদেশ ২০ ওভার অবদি টিকবে কিনা সেটা একটা প্রশ্ন আর যদি টেকে তাহলে স্কোরটা কত হতে পারে ? হলো না, নিগারের সঙ্গে সালমা, সুবানা কেউ টিকেনি, তবে সালমা টিকে থাকলেও স্কোর ৬০ রান পেরুবার আগেই তো ৭ উইকেট নেই!

১৭তম ওভার শুরু হবার আগেই সিলেটের আকাশ কাঁদতে শুরু করে। এ যেন বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলের করুণ দশা দেখে আকাশ কাঁদতে ছিল। তাতে ম্যাচ আপাতত বন্ধ। দলীয় স্কোর ১৭.৩ ওভারে ৫৮/৭। ১৭ রানে অধিানয়ক নিগার, সালমা অপরাজিত ২৪ আর লতার ১২ রানে সুবাদে ৭০ রানই বাংলাদেশ যোগ্যতার মাপকাঠি।

তবে এর মধ্যে সবেধন নীলমণির মতো পাক নারী দলের একটি উইকেট পতন ঘটনা বাংলাদেশের স্পিনার সালমা। উইকেটগ্লাভস হাতে ট্যাম্পিং করলে শামিমা। পুরো ম্যাচে এটাই বাংলাদেশের একমাত্র সফলতা। ৯ উইকেটের হারের (৪৬ বল না খেলেই) নিগার সুলতানারা মানসিক ভাবে অনেকটা পেছনের দিকে চলে গেল।