ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর পক্ষ হয়ে লড়ছে ইরানের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া, ড্রোন হামলা পরিচালনার জন্য ক্রাইমিয়ায় মোতায়েন করা হয়েছে ইরানী বিশেষজ্ঞদের- বলে অভিযোগ করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। এ অবস্থায় কিয়েভের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল। এদিকে, ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের দাবি, ইউরোপে অভিবাসীর ঢল বাড়াতেই কিয়েভে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে মস্কো।

মুহুর্মুহু রুশ ড্রোন আর রকেট হামলায় জ্বলছে ইউক্রেনের বহু বিদ্যুতকেন্দ্র। বাদ পড়ছে না গ্যাস সরবরাহ কেন্দ্র থেকে শুরু করে জ্বালানি শোধনাগারের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও। একের পর এক রুশ ড্রোন হামলায় ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলের শহরগুলো পরিণত হয়েছে আতঙ্কের জনপদে।
ইউক্রেনের আইভানো-ফ্রাংকিভিস্কের গভর্নর সভেতলানা অনিশ্চাক বলেন, এখন কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোয় হামলা চালানো হচ্ছে। শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হয়ে গেছে বুরস্থিন পাওয়ার প্ল্যান্ট। ফলে পুরো আইভানো অঞ্চলের মানুষ বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, ড্রোন হামলা চালাতেই ইউক্রেনে অবস্থান করছে ইরানের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। মস্কোকে আরও বিধ্বংসী অস্ত্র সরবরাহ করতে পারে তেহরান- এমন আশঙ্কাও জানিয়েছে ওয়াশিংটন। এ অবস্থায়, ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েল।

অভিযোগ প্রসঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন- আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে ইরানী সামরিক বাহিনীর সদস্যরা ইউক্রেনে অবস্থান করছে। ক্রাইমিয়ায় তারা ড্রোন হামলার জন্য এদিকে ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেয়ার প্রসঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গানৎজ বলেছেন, হামলা ঠেকাতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদারে ইউক্রেনকে সহায়তা করবে ইসরায়েল। এক্ষেত্রে সতর্কতামুলক বিভিন্ন সরঞ্জাম সরবরাহ করতে পারে তেল আবিব। তবে আমরা ইউক্রেনবাসীকে মানবিক সহায়তার বিষয়ে বেশি জোর দিচ্ছি।

এদিকে, উভয়পক্কের আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মধ্যে সামি, খেরসনসহ বিভিন্ন এলাকা ছাড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ভিড় করছেন স্লোভাকিয়া-মলডোভা সীমান্তে।

এ অবস্থায় সাম্প্রতিক এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলদেমির জেলেনস্কি বলেন, রুশ হামলায় ইউক্রেনের এক তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। রাশিয়া হামলা, বিদ্যুৎ এবং খাদ্য সংকটের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে; যাতে ইউক্রেনের বাসিন্দারা দেশ ছেড়ে চলে যায় ইউরোপে। এটা স্পষ্ট যে ইইউতে অভিবাসীর ঢল বাড়াতেই এ হামলা চালিয়েছেন পুতিন।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সকালেও খারকিভে কয়েক দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।