জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘আইন অধ্যয়নের মাধ্যমে সমাজে মুক্তবুদ্ধির জায়গা নিশ্চিত হয়। নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সমাজ আরও আধুনিক ও অগ্রসর হয়। সুতরাং যারা আইনের শিক্ষার্থী, তারা জীবনজুড়ে মূলত বিশ্বব্যবস্থাকে পাল্টে দেয়ার জন্য নিজেকে নিবেদিতপ্রাণ করে। প্রকৃতি, সমাজ এবং রাষ্ট্র আমাদের সংঘবদ্ধতার সকল স্তরে আমরা পরিশুদ্ধ হতে চাই। সে কারণেই আইনের মাধুর্য ভিন্নতর। আমরা সেরকম আইন শিক্ষার মাধ্যমে নিজেদের প্রস্ফুটিত করবো।’

শনিবার রাজধানীর আইডিয়াল ল’ কলেজ আয়োজিত নবীন বরণ, কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।

উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর শিশুপুত্রের নাম রেখেছিলেন দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের নামে। যিনি বিশ্ব নেতাদের পত্র দিয়ে, পত্রাঘাত করে দর্শন চর্চা করে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে একটি বিশ্বযুদ্ধকে ঠেকিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু বার্ট্রান্ড রাসেলের বই পড়তেন। বঙ্গবন্ধু বছরের পর বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। তিনি যখন ঘরে ফিরে বাসায় বই পড়েছেন, পাশে সহধর্মিনীকে নিয়ে সেই পড়া অনুবাদ করে শুনিয়েছেন। একসঙ্গে দুজনে মিলে ঠিক করেছেন শিশুপুত্র রাসেলের নাম। সেই শেখ রাসেলকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়, যাতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের একটি সদস্যও যেন বেঁচে না থাকে।

উপাচার্য বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে শুধু হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হয় নি ঘাতকরা, তারা দেশে ইনডেমনিটির আইন করেছে। যে আইনে নিষ্ঠুর নিয়ম করে হত্যাকারীদের বিচার করাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আবার দেশে যখন গণতন্ত্র ফিরেছে, তখন সেই কালো আইন বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচারের পথ নিশ্চিত করা হয়েছে। এর মানে আইনের ফাঁক-ফোঁকরেও নির্যাতন, নিষ্পেষণ থাকে। অপরের উপর খরগ হবার সমস্ত ব্যবস্থা থাকে।’

দেশের প্রথিতযশা এই সমাজবিজ্ঞানী বলেন, ‘আইনের শিক্ষার্থী হিসেবে পেশায় আপনি কতটা ভালো করলেন, না করলেন সেটির চেয়েও আপনি আইন শিখেছেন এটিই তো আপনাকে এক যৌক্তিক মানুষে পরিণত করবে। যেকিনা বুঝবে পৃথিবীতে থাকা আর না থাকার পার্থক্য কোথায়। বিচার কোথায় কোথায় রুদ্ধ হয়। এর মধ্য দিয়ে যখন আপনি সমাজে বিচরণ করবেন তখন আপনার মধ্যে একটি সুন্দর যৌক্তিক মানুষ বসবাস করবে। কেননা আপনি পরিচালিত হতে চেয়েছেন আইনের দ্বারা, যা পৃথিবীতে সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি। যা দিয়ে মানুষ নিয়ন্ত্রিত হয়।

কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ড. এম. এ. হালিম পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যারিস্টার মো. সাজ্জাদ হোসেন, তেজগাঁও কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মো. আব্দুর রশিদ, তেজগাঁও মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম প্রমুখ।