নকআউট পর্বের অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে কোয়ালিফাই করেছে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে প্রথমে মেসি ও ৫৭ মিনিটে জুলিয়ান আলভারেজ এগিয়ে দেন আলবিসেস্তেদের। এরপর ৭৭ মিনিটে ক্রেইগ গুডউইনের গোলে একদফা ব্যবধান কমালেও আর ম্যাচে ফেরা হয়নি সকারুজদের।

নকআউট পর্বের এ ম্যাচ অস্ট্রেলিয়ার ফুটবলের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোর মধ্যে একটি নিঃসন্দেহে। লিওনেল মেসির জন্যও। একে তো আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে ১০০০তম ম্যাচ তার; আর আর্জেন্টিনার অধিনায়ক হিসেবে ১০০তম।

প্রথমার্ধের শুরু থেকেই বেশিরভাগ বল নিজেদের দখলেই রেখেই আক্রমণে যাচ্ছিলো আলবিসেলেস্তেরা। বেশ কয়েকদফা গোলের বেশ কাছেও চলে গিয়েছিলো তারা। কিন্তু, বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি ম্যাক অ্যালিস্টার-ডি পল ও মেসিরা।

ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ভালো আক্রমণটি আসে ম্যাচের ১৯ মিনিটে। বামপ্রান্ত থেকে করা সে আক্রমণে বিহেস চমৎকার এক পাসে বল এগিয়ে দেন আরভিনকে। কিন্তু, ডি পলের তৎপরতায় সে যাত্রা বিপদ থেকে রক্ষা পায় আর্জেন্টিনা।

তবে, আর্জেন্টিনা ম্যাচে নিজেদের উপস্থিতির জানান দেয় ম্যাচের ৩৫ মিনিটে। বল পায়ে অস্ট্রেলিয়ার ডি বক্সে ঢুকেই প্রথমে ম্যাক অ্যালিস্টারকে বল দেন মেসি। সেখানে তার সামনে ছিলেন সাউটার এবং রায়ান। ডি পল আবারও বল এগিয়ে দেন মেসিকে, সেখান থেকেই দৃষ্টিনন্দন এক শটে বল জালে জড়ান মেসি।
এরপর, অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণে আরও কয়েকদফা আক্রমণ চালান মেসিরা। কিন্তু গোল ব্যবধান আর বাড়েনি। ফলে, ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।

৫৭ মিনিটে জুলিয়ান আলভারেজের দেয়া গোলে ব্যবধান বাড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২-০ গোলের লিড নেয় আর্জেন্টিনা। এ সময় অস্ট্রেলিয়ার ডি বক্সে প্রথম চ্যালেঞ্জ হিসেবে ম্যাট রায়ানের সামনে আসেন ডি পল। এ সময় রায়ানের পায়েই ছিলো বল। কিন্তু, তার এক মুহূর্তের ভুলে বল পেয়ে জালে জড়ান আলভারেজ। ২০০৬ সালে হার্নান ক্রেসপোর পর আলভারেজই প্রথম আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় যিনি নিজের প্রথম দুই বিশ্বকাপে গোল পেয়েছেন। আর এ রেকর্ড করা ষষ্ঠ আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় তিনি।

গোল ব্যবধান আরও বাড়ানোর সুযোগ আলবিসেলেস্তেরা পেয়েছিলো। কিন্তু, স্কোরার আলভারেজের বদলি হিসেবে নামা লাউতারো মার্টিনেজ অন্তত তিনটি সুযোগ মিস করায় আর গোল ব্যবধান বাড়ানো হয়নি স্কলারি শিষ্যদের।

৭৭ মিনিটে গোল ব্যবধান কমান ক্রেইগ গুডউইন। গোলের সামনে তার নেয়া জোরালো শট এনজো ফার্নান্দেসের গায়ে ডিফ্লেক্টেড হলে গোল পায় সকারুজরা। এর তিন মিনিটের মাথায় আরও একবার আর্জেন্টিনার গোলমুখে আক্রমণ চালায় অস্ট্রেলিয়া। ৮১ মিনিটে বল নিয়ে এগোচ্ছিলেন আজিজ বেহিস। কিন্তু, তার শট প্রতিহত করেন লিসান্দ্রো মার্টিনেজ।

অতিরিক্ত সময়েও সকারুজদের বেশ কঠিন পরীক্ষা নিয়েছেন মেসি-ডি পলরা। ৯৩ ও ৯৪ মিনিটে বেশ কয়েকবার গোলমুখে শট নিলেও বল আর জালে জড়ায়নি। ফলে, ২-১ ব্যবধানে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেলো আর্জেন্টিনা। আর অস্ট্রেলিয়ার কাতার বিশ্বকাপ মিশন শেষ হলো এখানেই।