গাজীপুরে দু’টি পৃথক অভিযানে বিলুপ্ত প্রায় বন্যপ্রাণী তক্ষক ও ৮শ’ পিস ইয়াবা টেবলেটসহ ৬জনকে গ্রেফতার করেছে জিএমপি’র বাসন থানা পুলিশ। মহানগরীর বাসন থানাধীন আউটপাড়া এলাকা হতে তক্ষকসহ ৩জনকে এবং নলজানী এলাকা হতে নারীসহ অপর তিনজনকে ইয়াবা টেবলেটসহ গ্রেফতার করা হয়। উভয় ঘটনায় বাসন থানায় পৃথক দুটি মামলা রুজু হয়েছে। বুধবার দুপুরে জিএমপি’র সদর দপ্তরে উপ-কমিশনার আবু তোরাব মোঃ শামসুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

প্রেস ব্রিফিংকালে জিএমপি’র সহকারি উপ-পুলিশ কমিশনার রেজওয়ান আহমেদ, সহকারি কমিশনার চৌধুরী মোহাম্মদ তানভীর, বাসন থানার ওসি মো. আবুল মালেক খসরু খান উপস্থিত ছিলেন।

তক্ষকসহ গ্রেফতারকৃতরা হলো ময়মনসিংহের কোতয়ালী থানার বলাশপুর এলাকার মহরম আলীর ছেলে মাসুদ রানা (৫৩), চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার জীবননগর গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালেবের ছেলে ইদ্রিস আলী (৪৮), নোয়াখালী জেলা সদর উপজেলার শিবপুর গ্রামের মৃত আবুল হাশেমের ছেলে শাহিন আলম (৪২)।
ইয়াবাসহ অপর গ্রেফতারকৃতরা- হলো শেরপুর জেলা সদর উপজেলার রৌহা গ্রামের আব্দুল লতিফের স্ত্রী মুন্নী বেগম (৩০), গাজীপুর মহানগরের পূবাইল থানাধীন হারবাইদ এলাকার ছামেদ আলীর ছেলে নজরুল ইসলাম (৫২), এবং একই এলাকার খালেক মোল্লার ছেলে মিলন মোল্লা (২৩)।

জিএমপি’র উপ-কমিশনার আবু তোরাব মোঃ শামসুর রহমান জানান, কক্সবাজার থেকে একটি তক্ষক পাচার করে বিক্রির উদ্দেশ্যে গাজীপুরে এনে মঙ্গলবার দুপুরে মহানগরীর বাসন থানাধীন আউটপাড়া এলাকার বঙ্গমার্কেটের সিদ্দিক হাজীর ফার্নিচারের দোকানের সামনে অপেক্ষা করছিল বন্যপ্রাণী পাচারকারী চক্রের সদস্য মাসুদ রানা। এ গোপন সংবাদ পেয়ে বাসন থানা পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তক্ষক ক্রেতা ইদ্রিস আলী ও শাহিন আলমসহ বিক্রেতা মাসুদ রানাকে আটক এবং একটি তক্ষক উদ্ধার করে।

তিনি জানান, গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ বন্য প্রাণী পাচারকারী দলের সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বন্য প্রাণী সংগ্রহ করে কালোবাজারের মাধ্যমে দেশের বাহিরে পাচার করে আসছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা স্বীকার করে জানিয়েছে।

এদিকে সিসি ক্যামেরা ও প্রিন্টারের টোনারের ভেতরে ইয়াবা টেবলেট লুকিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পার্সেল করে পাচারকালে এক নারীসহ তিনজনকে এদিকে একইদিন বিকেলে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় ৮’শ পিছ ইয়াবা টেবলেট জব্দ করা হয়। পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, কক্সবাজার থেকে সিসি ক্যামেরা ও প্রিন্টারের টোনারের ভেতরে লুকিয়ে ইয়াবা টেবলেটের একটি বড় চালান সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে গাজীপুরে নিয়ে আসছে মাদক ব্যবসায়ীরা। এ গোপন সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ওই কুরিয়ার সার্ভিসের গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন নলজানীস্থ কার্যালয়ের সামনে অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় কুরিয়ার সার্ভিসের অফিস থেকে পার্সেল গ্রহন করে নিয়ে যাওয়ার সময় নারীসহ তিনজনকে সিসি ক্যামেরা ও প্রিন্টারের টোনারসহ আটক করে। পরে ওই সিসি ক্যামেরা ও প্রিন্টারের টোনারে তল্লাশী চালিয়ে সুকৌশলে লুকিয়ে রাখা ৮শ’ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ। তারা দীর্ঘদিন ধরে অভিনব কৌশলে কক্সবাজার ও কুমিল্লা হতে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাদকদ্রব্য গাজীপুরে এনে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রয় করে আসছিল বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে গ্রেফতারকৃতরা।