দুর্নীতি ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ৫ দফা দাবিতে বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন পাবনার দুবলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মচারি ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অবিলম্বে দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সকালে পাবনা সদর উপজেলার বহুল আলোচিত সমালোচিত দুবলিয়া উচ্চবিদ্যালয়টির চত্বরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধনে শত শত শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি ইতোমধ্যেই গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। প্রধান শিক্ষক ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন। এছাড়াও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনও হয় না।
তারা আরও বলেন, বিদ্যালয়ের মালিকানাধীন দুটি দোকান বিক্রি করে ৯ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রধান শিক্ষক, যা প্রমাণিত। কিন্তু তার এমন সব দুর্নীতি প্রতিবাদ করায় শিক্ষকদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। সেই হয়রানির অংশ হিসেবে সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুল হকের বিরুদ্ধেও নানা প্রতিহিংসামূলক কাজ করা হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের নিয়মিত ক্লাস হয় না। আশপাশের স্কুলে বছরের শুরু থেকেই ক্লাস শুরু হলেও আমাদের এখানে হয়নি। আমাদের কথা শিক্ষকরা কর্ণপাত করেন না। আমরা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। এভাবে চলতে থাকলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান তলানিতে ঠেকে যাবে। এভাবে আমাদের শিক্ষা জীবন নষ্ট করার অধিকার কারো নেই।

এসময় ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন শিক্ষকরা। দাবিগুলো হলো-হচ্ছে, সিনিয়র শিক্ষক মোঃ আব্দুল হক বিরুদ্ধে দেওয়া অবৈধ কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রত্যাহার, তদন্ত কমিটি কর্তৃক প্রধান শিক্ষকের বিদ্যালয়ের আয় ব্যয়ের হিসাব প্রদানের নির্দেশনা বাস্তবায়ন, শিক্ষক-কর্মচারীর বাড়ি ভাড়া, উৎসব ভাতা ও চিকিৎসা ভাতার রেজুলেশনসহ নিয়মিত ভাতা প্রদানের কার্যকরী পদক্ষেপ, সরকার কর্তৃক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টিউশন ফি এর হিসাব প্রদান, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার সুষ্ঠু পরিবেশ, সুন্দর ও মানসম্মত শিক্ষার বাস্তবায়ন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুল হক, আসাব উদ্দিন, আকমল হোসেন, বাবুল কুমার কর্মকার, মোছা. সবনম মোস্তারী, গোলাপী রানি সরকার, শহিদুর রহমান, জিলাল উদ্দিন, আব্দুস শুকুর, কামাল হোসেন, সুজন আলী খান, ছাবিনা ইয়াসমিন ও জামাল হোসেনসহ বিদ্যালয়ের কর্মচারী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলেও প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে এই মানববন্ধন সম্পূর্ণ প্রতিহিংসামূলক ও আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা।