পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন ওড়িশার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নবকিশোর দাস। তাঁকে হত্যায় অভিযুক্ত ওড়িশা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক একজন ‘মানসিক রোগী’। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর চিকিৎসা চলছে। তা সত্ত্বেও কেন তাঁকে পিস্তল দেওয়া হয়েছিল, কেনই বা তাঁকে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল রাখা হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের নাম গোপালক্রুষ্ণা দাস। রোববার দুপুরে ওড়িশার ঝাড়সুগুড়া জেলার ব্রজরাজনগরে গান্ধী চকের কাছে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে হঠাৎ গুলি ছোড়েন তিনি। পর পর দু’টি গুলি লাগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নবকিশোরের বুকে। গুরুতর আহত অবস্থায় মন্ত্রীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে বাঁচানো যায়নি তাকে, রোববার সন্ধ্যায় হাসপাতালে মৃত্যু হয় নবকিশোরের।

গুলি চালানোর পর পুলিশ সদস্য গোপালক্রুষ্ণা দাসকে স্থানীয় লোকজনই ধরে ফেলেন। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জানা গেছে, গোপালক্রুষ্ণা বাইপোলার ডিজঅর্ডারে ভুগছিলেন। এটি এক ধরনের মানসিক রোগ, যার ফলে মন স্থির থাকে না। রাগ, দুঃখ প্রভৃতি আবেগ ঘন ঘন পরিবর্তিত হয়। গভীর অবসাদে ভোগেন রোগী।

ওড়িশার ব্রহ্মপুরের এমকেসিজি মেডিকেল কলেজের মনোরোগ বিভাগের প্রধান চন্দ্রশেখর ত্রিপাঠি বলেন, ‘গোপালক্রুষ্ণা ৮ থেকে ১০ বছর আগে প্রথম আমার ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। তিনি খুব তাড়াতাড়ি মাথা গরম করে ফেলতেন। তাঁর চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু আমি জানি না নিয়মিত তিনি ওষুধ খাচ্ছিলেন কি না। নিয়মিত ওষুধ না খেলে রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। গত এক বছরে গোপালক্রুষ্ণা আমার ক্লিনিকে আর আসেননি।’

ব্রহ্মপুরে পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেছিলেন গোপালক্রুষ্ণা। ১২ বছর আগে ঝাড়সুগুড়ায় তাঁর বদলি হয়। এর পর থেকে সেখানেই থাকছিলেন তিনি। সেখানেই রোববার তাঁর চালানো গুলিতে মৃত্যু হয় রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর। গোপালক্রুষ্ণার কাছে লাইসেন্স-সহ পিস্তল ছিল।

গোপালক্রুষ্ণা যে মানসিক রোগে ভুগছিলেন এবং এর জন্য চিকিৎসা নিতেন, তা স্বীকার করেছেন তাঁর স্ত্রীও। তবে স্ত্রী ও পরিবারের সঙ্গে থাকতেন না গোপালক্রুষ্ণা। কাজের সূত্রে দূরে থাকতে হত তাঁকে। তাই নিয়মিত ওষুধ খেতেন কি না, নিশ্চিত নন স্ত্রী।

পুলিশ জানিয়েছে, রোববার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার কাজেই নিয়োজিত ছিলেন গোপালক্রুষ্ণা। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। সূত্র: এনডিটিভি ও আনন্দবাজার পত্রিকা