বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের দরিদ্র নরসুন্দরের (নাপিত) মেয়ে নাজিরা সুলতানা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তবে পরিবারে অভাবের কারণে তার ভর্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন তার পাশে দাঁড়িয়েছে।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বুধবার দুপুরে তাদের বাড়িতে গিয়ে কুশল বিনিময় ও ভর্তিসহ অন্যান্য ব্যয় বহনে এককালীন ৫০ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা দেন।

মেধাবী নাজিরা সুলতানা বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের নাপিত নজরুল ইসলামের মেয়ে। তিনি ২০২০ সালে ছয়পুকুরিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। ২০২২ সালে সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাশ করেছেন।

মেয়ে মেধাবী হওয়ায় নজরুল ইসলাম অনেক কষ্টে তার লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছেন। নাজিরা ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় ৭২ স্কোর নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান। তার মেরিট পজিশন ১৫৬৮।

এদিকে নাজিরা মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেলেও পরিবারের অভাবের কারণে ভর্তি ও অন্যান্য ব্যয় বহনে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। তার বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের নজরে আসে।

তিনি বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে নাজিরা সুলতানাদের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে ভর্তি ও অন্যান্য ব্যয় বহনের জন্য ৫০ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেন।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নাজিরা সুলতানা বলেন, ডিসি স্যার মেডিকেলে ভর্তি ও তার লেখাপড়ার খরচ বহনে আর্থিক সহায়তা করেছেন। সমস্যা মিটে যাওয়ায় তিনি খুব খুশি। তিনি লেখাপড়া শেষ করে ভালো চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চান। এজন্য তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

এক প্রশ্নের উত্তরে নাজিরা বলেন, বাবা নাপিত হলেও তিনি তার পেশা নিয়ে গর্বিত। কারণ এই গরিব বাবাই তাকে অনেক কষ্টে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। আজ তার কারণেই তিনি চিকিৎসক হতে যাচ্ছেন।

বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ভর্তিতে অন্তত ২০ হাজার টাকা ও থাকা-খাওয়াসহ অনেক টাকার প্রয়োজন ছিল। জেলা প্রশাসক এগিয়ে আসায় তিনি তার প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি সবার কাছে তার মেয়ের জন্য দোয়া চেয়েছেন।

জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, তার এ অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য ভর্তি ফি, বই এবং হোস্টেলে অবস্থানকালীন ব্যয়ের জন্য এককালীন ৫০ হাজার টাকার আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তর করেছেন।