বাঙালি জাতির জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভালোবাসা নিঃস্বার্থ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

শুক্রবার বিকেলে গেন্ডারিয়ার জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘মানবসভ্যতার সব কিছুর সঙ্গেই আমি সম্পৃক্ত। কিন্তু বাঙালির সব বিষয় আমাকে ভাবায়। বাঙালির প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসায় হলো আমার জীবন ও রাজনীতির উৎস- বঙ্গবন্ধু তার আত্মজীবনীতে লিখে গেছেন। বাঙালি জাতির প্রতি তার এই অকৃত্রিম ভালোবাসা তিনি কোনো কিছুর বিনিময়ে চাননি। এই ভালোবাসা ছিল নিঃস্বার্থ।’

আত্মত্যাগে বলিয়ান হয়েই বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করে শেখ তাপস বলেন, ‘তিনি বাঙালিকে ভালোবেসে গেছেন এবং এর জন্য তিনি ত্যাগ করে গেছেন। আর তার সেই ভালোবাসাকে প্রকাশের জন্য তিনি অকৃত্রিম-অপূরণীয় আত্মত্যাগকে বেছে নিয়েছিলেন। তিনি কোনো সময় আত্মত্যাগ করতে দ্বিধা বোধ করেননি, সংকোচ করেননি। এই আত্মত্যাগে বারবার তার অসীম সাহসিকতা প্রস্ফুটিত হয়েছে। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র থাকা অবস্থায় তিনি ছাত্রদের অধিকার আদায়ে বিদ্যালয় ভবন সংস্কারে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রীর পথ রোধ করেছিলেন। এ রকম বহু নজির তিনি বারবার স্থাপন করেছেন। বাঙালির অধিকার আদায়ে কারাগারে যেতেও তিনি কোনো সময় ভয় পাননি। এভাবে তিনি তার অসীম সাহসিকতা ও গভীর আত্মত্যাগে বলিয়ান হয়েই আমাদেরকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।’

বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশে বঙ্গবন্ধুর অবদান তুলে ধরে ‍তিনি বলেন, ‘সবাই আমাদেরকে শাসন করেছে, শোষণ করেছে। আমরা কোনোদিনও স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি। এই উপলব্ধি যার মাঝে সেই ছোট্ট বয়সেই এসেছে, চেতনায় জাগ্রত হয়েছে- তিনি হলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের মাধ্যমে আমাদেরকে স্বাধীনতার পথে ধাবিত করেছিলেন।’

করপোরেশনের সমাজকল্যাণ ও কমিউনিটি সেন্টার বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সারোয়ার হাসান আলোর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফি, সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, করপোরেশনের মেয়র প্যানেলের সদস্য-১ ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. শহিদ উল্লাহ মিনু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘মার্চ মানে আন্দোলনের মাস, চেতনার মাস, আমাদের আনন্দের মাস। এ মাসেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মগ্রহণ করেছেন বলেই আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। বাঙালি জাতি এক স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ পেয়েছে। আর বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ বীরদর্পে উন্নয়নের দিকে এগিয়ে চলেছে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখতে নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে। সেজন্য ঘরে-ঘরে, ইউনিটে-ইউনিটে আওয়ামী লীগের দূর্গ গড়ে তুলতে হবে।’

বক্তব্য শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের শাহাদাতবরণকারী সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। পরবর্তীতে জাতির পিতার ১০৩তম জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা হয়। সবশেষে করপোরেশনের সংগীত শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষণার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।