গত ইং ১৫-০৩-২০২৩ তারিখ সন্ধ্যা ০৫:৩০ ঘটিকায় বাসন থানা এলাকার ইসলামপুর সাকিনস্থ ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের পশ্চিমে মোঃ কবির হোসেন এর সদ্য মাটি ভরাটকৃত ফাঁকা জমিতে মাটি চাপা অবস্থায় পা বের হওয়া ৫/৬ বছরের বাচ্চার লাশ পাওয়া যায়। ৯৯৯ এর সংবাদ পেয়ে দ্রুত বাসন থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। থানা পুলিশ যথারীতি লাশ সনাক্তে পার্শ্ববর্তী সকল থানায় বেতার মাধ্যমে সংবাদ দিলে বাসন থানায় পেয়ারা বাগান এলাকার এমন একটি ছেলে নিখোঁজ আছে মর্মে জানা গেলে দ্রুত তাদের ঘটনাস্থলে আসার সংবাদ দিলে জনৈক মো: জাফর আলী (৫৪) সহ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত হয়ে লাশ দেখে তার ছেলে সাখাওয়াত (০৬), পিতা-মোঃ জাফর আলী, মাতা- লাকী বেগম, সাং বড় হযরতপুর, থানা- মিঠাপুকুর, জেলা- রংপুর, বর্তমান সাং- ভোগড়া পেয়ারা বাগান, মোবারক এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া, থানা-বাসন, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর বলে স্বনাক্ত করেন এবং জানান যে তার ছেলে ইং ১৩-০৩-২০২৩ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ০৬:৩০ ঘটিকার সময় খেলার কথা বলে বর্তমান বাসা হতে বের হয়ে আর ফিরে আসে নাই। এই সংক্রান্তে গত ইং ১৪/০৩/২০২৩ তারিখ নিহতের মাতা বাসন থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন। যাহার নম্বর- ৮৬৯, তারিখ- ১৪/০৩/২০২৩। পরবর্তীতে নিহতের পিতা মোঃ জাফর আলীর এজাহারের প্রেক্ষিতে বাসন থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। যার মামলা নং- ১৭ তারিখ ১৬-০৩-২০২৩ খ্রিঃ, ধারা ৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ সাখাওয়াত হোসেন সহ বাসন থানার এএসআই (নিঃ) অলিউল্লাহ, কনস্টেবল- ২৩ মোঃ সোহরাওয়ার্দী কবির, উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) জনাব আবু তোরাব মোঃ শামছুর রহমান এর নির্দেশনায় অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ উত্তর) জনাব রেজওয়ান আহমেদ, পিপিএম এর নেতৃত্বে নিরলস ভাবে ০৬ দিন ধরে সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণ ও তথ্য সংগ্রহ করে যাচাই-বাছাই করে জানা যায় যে, পূর্বে সন্ধিগ্ধ আসামী মো: তাহারুল মিয়া (৩৫), পিতা- মোঃ ইয়াসিন আলী, সাং জামালপুর, থানা- পীরগঞ্জ, জেলা- রংপুর, বর্তমান সাং ভোগড়া পেয়ারা বাগান, মোবারক এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া, থানা-বাসন, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর এর সহিত অত্র মামলার ভিকটিম সাখাওয়াত (০৬) এর জ্যাঠাতো বোন শারমিন এর আনুমানিক ০২ বছর পূর্বে বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে দাম্পত্য কলহ চলতে থাকে। গত প্রায় ০৮ মাস পূর্বে সাখাওয়াত এর পরিবার কাজের উদ্দেশ্যে গাজীপুর বাসন থানাধীন পেয়ারা বাগান এলাকায় বসবাস শুরু করে। আসামী মোঃ তাহারুল মিয়া তার বউ শারমিনকে নিয়ে সাখাওয়াত এর পরিবারের পাশে একটি রুমে প্রায় এক মাস যাবৎ ভাড়া থেকে রাজ মিস্ত্রি, শ্রমিক এর কাজ করে আসছে। গত ইং ১৩/০৩/২০২৩ তারিখ বিকাল অনুমান ০৫.৩০ ঘটিকার সময় আসামী মোঃ তাহারুল মিয়া কাজ থেকে বাসায় আসার পর পর্যায়ক্রমে গোসল করতে যাওয়ার সময় তার বউ এর কাছে লুঙ্গি চাওয়া নিয়ে এবং বউকে ভাত বেরে খাওয়ানোর কথা বলায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এমন সময় সাখাওয়াত এর মা আসামী তাহারুল-কে বকাঝকা করে পরস্পরের মধ্যে বাকবিতন্ডার সৃষ্টি হয়। এমতাবস্থায় তাহারুলের স্ত্রী পাশের ঘরে টিভি দেখতে চলে যায়, তাহারুল রাগান্বিত হয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় বাসার গেইটের সামনে সাখাওয়াত-কে পেয়ে তাকে নিয়ে দোকানে মজা কিনে দিবে বলে নিয়ে যায়। তারপর গত ইং ১৩-০৩-২০২৩ তারিখ সময় অনুমান সন্ধ্যা ০৭.০০ ঘটিকার সময় বাসার সামনের গলি পথ দিয়ে হেটে বাসন থানা এলাকার ইসলামপুর সাকিনস্থ ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের পশ্চিমে মোঃ কবির হোসেন এর সদ্য মাটি ভরাটকৃত ফাঁকা নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। দাম্পত্য কলহ নিয়ে পূর্ব শত্রুতা এবং ঘটনার দিনে সাখাওয়াতের মায়ের সাথে ঝগড়া ও কথাকাটাকাটির জেরে-ক্রোধে রাগান্বিত হয়ে সাখাওয়াতকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে। রাত অনুমান ০৮:০০ ঘটিকার সময় আসামী তাহারুল তার রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে ভিকটিম সাখাওয়াত এর পরিহিত লুঙ্গি খুলিয়া তার গলায় পেচিয়ে টান দিয়ে দুই হাত দিয়ে সাখাওয়াতের গলায় চেপে ধরে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে। পরবর্তীতে সাখাওয়াত এর লাশ যাতে কেউ কোনদিন খুজে না পায় তার জন্য অন্ধকারে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে মাটি চাপা দিয়ে দেয়। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার রহস্য উদঘাটনের জন্য সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা, তথ্য প্রযুক্তির বিশ্লেষণ ও তথ্য সংগ্রহ করে ঘটনায় জড়িত পলাতক আসামী তাহারুল-কে গত ইং ২২/০৩/২০২৩ তারিখ গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতারকৃত আসামীর নাম ঠিকানা :-১ ) মো: তাহারুল মিয়া (৩৫), পিতা- মোঃ ইয়াসিন আলী, সাং জামালপুর, থানা- পীরগঞ্জ, জেলা- রংপুর, বর্তমান সাং ভোগড়া পেয়ারা বাগান, মোবারক এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া, থানা-বাসন, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর।