ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা যান। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. মামুন মোস্তাফী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ৫ এপ্রিল গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন ডা. জাফরুল্লাহ। পরে তাকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত রোববার দুপুরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়। মেডিকেল বোর্ডে কিডনি, মেডিসিন, ভাসকুলার সার্জন, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, ইনটেনসিভিস্ট চিকিৎসক ছিলেন। গতকাল সোমবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। করোনার পর কিডনি সমস্যার পাশাপাশি তার লিভারের সমস‌্যাও দেখা দেয়। এ ছাড়া, তিনি অপুষ্টি‌সহ গুরুতর সেপ‌টি‌সে‌মিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য গড়ে তোলা ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল’ এর অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন তিনি। ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল’ পরিবর্তিতে ১৯৭২ সালে ‘গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র’ নামে যাত্রা শুরু করে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান। ১৯৮৫ সালে ফিলিপাইনের র‌্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার এবং ১৯৯২ সালে তাকে সুইডেন থেকে রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। তিনি ২০০৯ সালে কানাডার ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অব ন্যাচারাল মেডিসিন থেকে ডক্টর অব হিউম্যানিটেরিয়ান উপাধি পান। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি থেকে তাকে দেওয়া হয় ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক হেলথ হিরো অ্যাওয়ার্ড।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী চট্টগ্রাম জেলার রাউজানের কোয়েপাড়া গ্রামে ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বাবা-মার ১০ সন্তানের মধ্যে ছিলেন সবার বড়।