বাগেরহাট থেকে রুহুল আমিন বাবুঃ বাগেরহাটের রামপালে একটি কোম্পানীর অর্ধ কোটি টাকা প্রতারনার অভিযোগ উঠেছে ৪ প্রতারকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কোম্পানী রূপসা র্যানস লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবেদ আলী শেখ ৪জনকে আসামী করে রামপাল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আবেদ আলী শেখ অভিযোগে জানান, গত ২২ জুলাই চট্টগ্রামের জনৈক লিটন আমাদের কোম্পানির পরিচালক আবুল কাশেমকে জানান রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৫ শত কোটি টাকার ক্রাপ এলুমিনিয়ামের তার এবং কন্টেইনার বিক্রি হবে। বিষয়টি জানতে পেরে মালামাল সরেজমিন দেখার জন্য গত ১লা আগস্ট আমিসহ কোম্পানীর কয়েকজন প্রতিনিধি ঢাকা থেকে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যাই।
তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রায় ৩শত ফুট দূরে গাড়ি থামিয়ে জনৈক লিটন আমাদের সাথে মিজানুর রহমান, মোঃ ওলিউল্লাহ ও মোঃ আল-আমিনের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। তখন মোঃ ওলিউল্লাহ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এ্যাডমিন অফিসার বলে জানান জনৈক লিটন।
মোঃ ওলিউল্লাহ গেটের পাস আমাদের গাড়ির ড্রাইভারের নিকট দিয়ে দেন। হালকা বৃষ্টি থাকায় আলামিন এবং ওলিউল্লাহ গাড়িতে বসেই আমাদেরকে বিভিন্ন স্থানে স্তপ আকারে রাখা ক্রাব এবং এ্যালুমিনিয়ামের তার ও কন্টেইনার দেখান। মালামাল দেখা শেষ করে আমরা ভেতর থেকে বেড়িয়ে আসি।
তখন ওলিউল্লাহ এবং আলামিন আমাদেরকে বলেন, এইসব মালামাল বিক্রির দায়িত্ব জনৈক মিজান সাহেবের। তারা আরো বলেন, আপনারা মিজান সাহেবের সাথে মালামালের মূল্য নির্ধারন করেন এবং যাবতীয় টাকা-পয়সা তাকে পরিশোধ করবেন। আমরা এখান থেকে মালামাল ডেলিভারি দেবো।
অভিযোগকারী আবেদ আলী শেখ আরো বলেন, মালামালের দর ঠিক করার জন্য জনৈক লিটন এবং আলামিন আমাদেরকে নিয়ে মিজানের বাড়িতে নিয়ে যান। মিজানের বাড়িতে বসে ক্রাবের দাম ৫২হাজার টাকা টন, এ্যালুমিনিয়াম ৭শত ৫০টাকা প্রতি কেজি ও প্রতি কন্টেইনার ২ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর জন্য আমরা তৎক্ষনাৎ নগদ ১০ হাজার টাকা বায়না করি। মালামাল প্রস্তুত করবার জন্য মিজান আমাদেরকে লেবারদের জন্য কিছু টাকা পাঠানোর কথা বলেন। আমি বলছি যে, কোনো অসুবিধা নেই, টাকা যা লাগে পাঠিয়ে দেবো।
পরবর্তীতে ২রা আগস্ট থেকে ৭ই আগস্ট পর্যন্ত মিজানুর রহমানের সোনালী ব্যাংক একাউন্টে, শেখ ফারদিন ডেয়ারী ফার্ম জনতা ব্যাংক একাউন্টে ও লিটনের মাধ্যমে বিকাশ একাউন্টে একাধিকবার মালামালের জন্য সর্বমোট ৫২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা প্রেরন করি।
অভিযোগকারী আরো জানান, জনৈক লিটন, যিনি এই মালামাল ক্রয়ের বিষয়ে আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেন তিনি এই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। আমরা তাকে বিশ্বাস করার সুবাধে তার দেওয়া তথ্যে আমরা বিশ্বাস করে ৫২ লক্ষ ৫০হাজার টাকা প্রেরণ করি।
আমরা মালামাল পাঠানোর বিষয়টি জানতে চাইলেই বলে দ্রæত ১০ ট্রাক মালামাল লোড হচ্ছে আরো কিছু টাকা পাঠান। আমরা টাকা পাঠালেও তারা কোন মালামাল পাঠায়নি। একাধিকবার কারণ জানতে চাইলে মিজান উল্টাপাল্টা কথা বলে তালবাহানা শুরু করে। তিনি বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদেরকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে। তারা বলেন, অপরাধী যেই হোক না কেন তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না।