রঙিন ফুল কপি চাষ করে হৈচৈ ফেলে স্বাবলম্বীর পথে পাবনার কৃষক আলী। পাবনা সদর উপজেলার বিল ভাদুরিয়া গ্রামের কৃষক আসলাম আলী ইউটিউব দেখে রঙিন ফুলকপি চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। তার রঙিন ফুলকপিতে পাবনা শহরের এমনকি জেলার অন্যান্য হাটবাজারগুলোর সবজির দোকান বেশ ভালেই বিক্রি হচ্ছে। আশা করছেন তিনি সাফল্যর মুখ দেখবেন।
বেচাকেনাতেও ধুম পড়েছে সবজির দোকানগুলোতে। ক্রেতারা এই কপি আসার সাথে সাথে আকৃষ্ট হচ্ছেন ক্রেতারা। প্রথমবার এমন ফুলকপি দেখেই কেনার ইচ্ছাপোষণ করছেন অনেক ক্রেতা। কৌতুল আর শখের বসে ক্রেতারা রঙিন ফুল কপি কিনে হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ফুল কপি বিক্রি হচ্ছেন ৮০-১০০ কেজি।

কৃষক আসলাম আলী বলেন, গত বছর আমার দুই মেয়ে ইউটিউবে রঙিন ফুলকপির ভিডিও দেখে। এরপর তারা আমার কাছে এসে এই ফুলকপি চাষ করার জন্য অনুরোধ করে। আমিও ভিডিও দেখে মুগ্ধ হই এবং চাষ করার জন্য চিন্তা-ভাবনা করি। এ জন্য আমি প্রথমে পাবনা সদর উপজেলা কৃষি অফিস যাই। কিন্তু কৃষি অফিস জানায় তাদের এ বিষয়ে কিছু করার নেই। এরপর আমি প্রথমে ইউটিউবের যে ভিডিও করেছিল তাকে ফোন দিই, তারা বলে ঢাকায় যোগাযোগ করার জন্য। এরপর আমি ঢাকায় বীজ ভান্ডারে যোগাযোগ করে বীজ নিয়ে এসে আবাদ করি।

তিনি আরও বলেন, আমার দেড় বিঘা জমিতে প্রায় ৬ হাজারের বেশি ফুলকপির গাছ রোপণ করেছিলাম। সবগুলোই ভালোভাবেই বড় হয়েছে। এখন আমি প্রতিদিন এইগুলো কেটে নিয়ে সরাসরি বাজারের নিয়ে বিভিন্ন দোকানে পাইকারী দামে বিক্রি করি। আমি পাইকারি ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। সেগুলো বাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৮০-১০০ টাকা পর্যন্ত।

আসলাম আলীর বাবা ওমর আলী বলেন, ‘প্রথম দিকে আমার চিন্তা হয়েছিল যে এগুলো সঠিকভাবে হবে কিনা। কিন্তু আমার ছেলের দেড় বিঘা জমিতেই সফলভাবে আবাদ হয়েছে। কপিগুলোও বেশ বড় বড় হয়েছে। আবাদের খরচ অন্যান্য কপির মতোই। আলাদা কিছুই নেই। তবে জৈব সার একটু বেশি দেওয়া লাগে। অনেকেই এই ফুলকপি দেখতে আমাদের জমিতে আসছেন। কেউ ছবি তুলছে, আবার কেউ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের খুব ভালো লাগছে।

পাবনা শহরের সবজি বিক্রেতা নান্নু ও মিলন জানান ‘ভালোই বেচাকেনা হচ্ছে এই কপি। সাদা কপি বিক্রি হচ্ছে যেখানে ৫০-৬০ টাকা, কেজি সেখানে রঙিন ফুলকপি বিক্রি করছি ৮০-১০০টা কেজি দরে। ক্রেতাদের বাড়তি আগ্রহ থাকায় ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে বলে তারা জানান। অনেক ক্রেতা এসে বলেছে স্বাদও বেশ ভালো। আমি নিজেই প্রতিদিন ৫০-৬০ পিচ এই রঙিন ফুলকপি বিক্রি করছি।’

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পাবনার উপ-পরিচালক ড. মো. জামাল উদ্দীন বলেন ‘এগুলো জাপানি জাতে ফুল কপি। আমাদের দেশে মাত্র দুই বছর আগে আবাদ শুরু হয়। পাবনাতে সাধারণ সাদা কপিই চাষ হয়, এবারই প্রথম এই রঙিন কপি চাষ করা হয়েছে। আগামীতে কেউ যদি এমন রঙিন কপি আবাদ করতে চান তাহলে কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে সব ধরনের সহযোগি দেওয়া হবে।’ তিনি জানান, এই রঙিন কপির পুষ্টিগুনও অন্য কপির থেকে অনেক বেশি।