আজ বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া খনি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেছে।
পাথর রাখার জায়গা না থাকায় খনির উৎপাদন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি উত্তোলন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে।
ঘোষণা অনুযায়ী আজ ১ ফেব্রুয়ালী বৃহস্পতিবার সকাল থেকে খনি উত্তোলন বন্ধ থাকবে। সেই সঙ্গে খনিতে কর্মরত প্রায় ৭ শতাধিক শ্রমিক-কর্মচারীদের অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছুটি দেওয়া হয়েছে।

মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু দাউদ মো. ফরিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রতিমাসে উৎপাদন বাড়লেও পাথর বিক্রিতে গতি নেই। প্রতি মাসে প্রায় দেড় লাখ টন পাথর উৎপাদনের বিপরীতে বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিকটন পাথর। এতে খনির ৯ ইয়ার্ডে বিভিন্ন সাইজের প্রায় ১০ লাখ টন পাথরের বিশাল মজুদ গড়ে উঠেছে।
পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া খনি থেকে গত ডিসেম্বর মাসে রেকর্ড পরিমাণ ১ লাখ ৩৯ হাজার টন পাথর উত্তোলন করা হয়েছে। ২৬ জানুয়ারি দৈনিক পাথর উত্তোলনের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৬ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে খনির ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসি। খনিতে দৈনিক পাথর উত্তোলনের লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন।

এর আগে কখনো একদিনে এত বিপুল পরিমাণ পাথর উৎপাদন করা সম্ভব হয়নি। প্রতি মাসে উত্তোলন বাড়লেও পাথর বিক্রিতে গতি নেই। এজন্য রেকর্ড পরিমাণ উত্তোলন করেও সময়মতো বিল পাচ্ছে না জিটিসি।
এ অবস্থায় অর্থ সংকটে পড়ে সময়মতো উত্তোলন বিল না পাওয়ায় ৭ শতাধিক দেশীয় খনি শ্রমিক-কর্মচারী ও প্রায় ১০০ বিদেশি খনি বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীর বেতন-ভাতা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে উৎপাদনকারী ঠিকাদারকে। পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া পাথর খনি কর্তৃপক্ষ ও উত্তোলন ঠিকাদার জিটিসির মাঝে প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট নিয়ে মতবিরোধ দেখা দেওয়ায় পুরোদমে পাথর উত্তোলন করেও জিটিসি শতভাগ বিল পাচ্ছে না।

খনি কর্তৃপক্ষ গেল বছরের মার্চ মাস থেকে ঠিকাদারের প্রতি মাসের উৎপাদন ও আনুষঙ্গিক খরচের বিলের ৭৫ শতাংশ দিচ্ছে। প্রতি মাসে ২৫ শতাংশ বিল কম দেয়ায় জানুয়ারি পর্যন্ত ১১ মাসে জিটিসির পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। চলতি জানুয়ারি মাসের বিলও সম্পূর্ণ পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। ফলে জিটিসির পাওনার পরিমাণ বেড়ে হবে প্রায় ৯০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, গত বছরের মার্চ মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ১১ মাসে প্রায় ১০ লাখ টন পাথর উত্তোলন করেছে জিটিসি। গড়ে প্রতি মাসে প্রায় ৭ কোটি ৬০ লাখ কম দেওয়া হয়েছে যা প্রদত্ত বিলের ২৫ শতাংশ। প্রাইস অ্যাডজাস্টমেন্ট না হওয়ায় খনি কর্তৃপক্ষ এভাবে জিটিসির টাকা আটকে রেখেছে।