প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে বই পড়ার আবহবান জানিয়ে বলেছেন, ঘুম না আসলে ঘুমের ওষুধ খান যারা তাদের ঘুমের ওষুধ খাওয়ার দরকার কী? একটু বইটই পড়লে, বই একটু হাতে নিলে ঘুম চলে আসবে। আমি সেটা নিজেই মনে করি।

বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১৬ লেখককে বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রদান করার পর প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তৃতার পর বইমেলা উদ্বোধন করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পড়ার অভ্যাসটা সকলের থাকা উচিৎ। বাবা-মা যদি ছোটবেলা থেকে শেখাই তাহলে কিন্তু পড়ার অভ্যাসটা হবে। অনেকের ঘুম আসে না ঘুমের ওষুধ খায়। ঘুমের ওষুধ খাওয়ার দরকারটা কি। একটু বই পড়লে-যে খুব বেশি ইন্টারেস্টড না সেটা হাতে নিলেই ঘুম চলে আসবে। আমি সেটা নিজেই মনে করি। কঠিন একটা প্রবন্ধ পড়লেই ঘুমটা তাড়াতাড়ি আসবে। বেশি মজারটা পড়লে কিন্তু আবার ঘুম চলে যাবে। এজন্য বেছে নিতে এমন একটা বই যেটা পড়লে তাড়াতাড়ি ঘুম চলে আসবে। তাহলে দেখবেন আরামেই ঘুমাবেন। আমি প্রায়ই এটা অনুসরণ করি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমারা বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলি, মায়ের ভাষায় কথা বলি। বাংলা একাডেমি আমাদের অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার। বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা।

তিনি বলেন, নিরাপত্তার বেড়াজালে স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে বলে আফসোস করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বইমেলায় আসায় কোনো মজা নেই। কারণ, স্বাধীনতা নাই। ডানে তাকাব নিরাপত্তা, বায়েও নিরাপত্তা, পিছনে গেলে নিরাপত্তা, সামনে নিরাপত্তা; এই নিরাপত্তার বেড়াজালে স্বাধীনতাটাই হারিয়ে গেছে। এখানে আসলে মনে পড়ে স্কুল জীবনের কথা, ছোটবেলার কথা। এই প্রাঙ্গণের সঙ্গে সবকিছুই ওঁতপ্রোতভাবে জড়িত। এখন সেই স্বাধীনতাটা নাই। জানি না কবে আবার স্বাধীনতা পাব।
প্রধানমন্ত্রী প্রকাশকদের শুধু কাগজের নয়, ডিজিটাল প্রকাশক হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে ডিজিটাল প্রকাশনার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা’। কী মধুর আমাদের ভাষা। আমি একটা কথা বলব যে, এখন আমাদের যুগটা হয়ে গেছে বিজ্ঞান প্রযুক্তির যুগ। বই প্রকাশ এটা অবশ্যই থাকবে, এটা যাবে না। কারণ, একটা বই হাতে নিয়ে পড়ার মধ্য দিয়ে আলাদা একটা আনন্দ আছে। আজকালকার ছেলের মেয়েরা আবার ট্যাবে করে বই পড়ে অথবা ল্যাপটপে পড়ে। যদিও আমরা ওইভাবে খুব একটা আনন্দ পাই না।

‘কিন্তু তারপরও আমাদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি সবকিছু নিয়ে এগিয়ে যেতে হলে আমাদের যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত। আমি আমাদের প্রকাশকদের অনুরোধ করব, প্রকাশকরা শুধুমাত্র কাগজের প্রকাশক হলে হবে না, ডিজিটাল প্রকাশক হতে হবে। ডিজিটাল হলে শুধু আমাদের দেশে নয়, বিদেশেও সকলের কাছে এটা পৌঁছাতে পারব। অন্যান্য ভাষাভাষী লোকেরাও পড়বে। কাজেই সেদিকেও একটু নজর দিলে মানসিকতার পরিবর্তন হয়ে আধুনিক প্রযুক্তিটাও নিজেরা রপ্ত করতে পারব। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাইব্রেগুলিতেও সাথে সাথে অডিও ভার্সন থাকবে, অডিও ভার্সনের কিন্তু প্রয়োজন আছে। সেটাও থাকলে অনেকের সুবিধা, শুনবে জানতে পারবে, সে ব্যবস্থাটাও