বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের মধ্যস্থতায় কাতার থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নৌবাহিনীর আট অফিসার মুক্তি পেয়েছেন বলে খবর প্রচারিত হয়েছে। ইসরাইলের হয়ে তারা গুপ্তচরবৃত্তি চালাচ্ছিল- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।

সোমবার ভারতের পররাষ্ট্র দফতর জানায়, কাতারের একটি আদালত মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত থাকা আট সাবেক ভারতীয় নৌবাহিনীর অফিসারকে মুক্তি দিয়েছে। এর মধ্যে সাতজন ইতোমধ্যেই ভারতে ফিরে এসেছেন।

মঙ্গলবার বিজেপি নেতা সুব্রহ্ম্যনিয়ম স্বামী দাবি করেন যে সদ্য কাতারে বন্দি নৌবাহিনীল সদস্যরা যে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরতে পেরেছেন, এই জটিল কূটনৈতিক সমস্যা মিটেছে শাহরুখ খানের হস্তক্ষেপেই। এরপরেই অবশ্য অফিসিয়াল স্টেটমেন্ট জারি করে ঘটনা পুরোপুরি অস্বীকার করেন শাহরুখ।

এই পুরোপুরি কূটনৈতিক এই ব্যাপারে কীভাবে জুড়ছে শাহরুখ খানের নাম? আসলে কিংখানের নাম জুড়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সুব্রহ্ম্যনিয়ম স্বামী বলেন, এই মুক্তির নেপথ্যে বড় ভূমিকা রয়েছে বলি তারকার। তার দাবি, কাতারের শীর্ষনেতাদের সাথে আলোচনা সফল না হওয়ায় খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই শাহরুখকে অনুরোধ করেছিলেন, এই বিষয়ে মাথা ঘামাতে। এরপর দোহাতে এএফসি এশিয়ান কাপের ফাইনালে কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা হয় শাহরুখের। এই সমঝোতার মধ্যে কোনো আর্থিক অঙ্কও থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত ওই বিজেপি নেতার। তার এই দাবির পরেই হইচই পড়ে যায় নেটপাড়ায়।

এরপরেই শাহরুখ খানের তরফ থেকে একটি অফিসিয়াল বিবৃতি জারি করা হয়, যেখানে স্পষ্ট এই যোগের কথা অস্বীকার করেন শাহরুখ। পাশাপাশি তিনি জানিয়ে দেন যে কূটনৈতিক বিষয়গুলো নেতারাই সমাধান করেন। অন্যান্য ভারতীয়র মতো শাহরুখও খুশি যে আট সাবেক নৌবাহিনী অফিসারের মুক্তি পেয়েছে।

উল্লেখ্য, দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই নাগরিকদের মুক্তি এবং স্বদেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা কাতারের আমিরের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করছি’। ২০২২ সালে ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসে সাবেক নৌবাহিনী অফিসারদের গ্রেফতার হওয়ার এই খবর। ভারত গত বছরের অক্টোবরে বলেছিল যে কাতারের ফার্স্ট ইনস্ট্যান্স আদালত ওই ব্যক্তিদের মৃত্যুদণ্ড দেয়ার পরে ভারত ‘গভীরভাবে হতবাক’ হয়েছিল। পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সাজার বিরুদ্ধে আপিল করে।

ডিসেম্বরে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছিল যে কাতারে তার রাষ্ট্রদূত জেলে থাকা ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করেছেন। ওই মাসের শেষের দিকে, মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল যে কাতারের আপিল আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ড কমিয়েছে। জানুয়ারিতে, মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র নিশ্চিত করেন যে সকলের মৃত্যুদণ্ডকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ডে রূপান্তরিত হয়েছে। কিন্তু কারাগারের তরফে মেয়াদ প্রকাশ করা হয়নি। এরপরেই জানা যায় যে কাতারের একটি আদালত মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত থাকা আট প্রাক্তন ভারতীয় নৌবাহিনী অফিসারকে মুক্তি দিয়েছে।
সূত্র : জি নিউজ