সোনালী ব্যাংকের প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার ঋণ দুর্নীতির ১১ মামলার মধ্যে একটি মামলায় হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার ঢাকার ১ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আবুল কাশেম এ রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি মামলার যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে রায়ের তারিখ ২৮ ফেব্রুয়ারি ঠিক করেন আদালত। তবে ওইদিন দুদকের আইনজীবী মীর আহম্মেদ সালাম মামলাটি রায় থেকে উত্তোলন পূর্বক দুজন ম্যাজিস্ট্রেটের সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। আদালত দুদকের আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

এরপর আদালত মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৪ মার্চ দিন ধার্য করেন। ৪ মার্চ তৎকালীন ঢাকার দুই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান ও কেশব রায় চৌধুরী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এদিন তাদের সাক্ষ্য শেষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ১২ মার্চ দিন ধার্য করেন। গত ১২ মার্চ রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, ভুয়া ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের হিসাবে সুতা রপ্তানির নামে ৫২৫ কোটি ৬২ লাখ ৯২ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের সুতা রপ্তানি করা হয় বলে নথিপত্রে দেখানো হয়। ওই হিসাবে পুরো অর্থ জমা করা হলে তা থেকে ১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা হলমার্কের আরেক ভুয়া প্রতিষ্ঠান অ্যাপারেল এন্টারপ্রাইজের হিসাবে স্থানান্তর করা হয়, যা পরে তানভীর ও তার স্ত্রী তুলে নেন।

২০১২ সালের ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, পরস্পরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অর্থের অপব্যবহার এবং পাচারের অভিযোগে রাজধানীর রমনা থানায় এ মামলা করে দুদক। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা মামলার অভিযোগ গঠন করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এ বদলির আদেশ দেন।

এ মামলার আসামিরা হলেন- হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. তানভীর মাহমুদ, তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, তানভীরের ভায়রা ও গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ, টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি মো. আবদুল মালেক ও সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকার।

এ ছাড়া সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন বা রূপসী বাংলা শাখার সহকারী উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মতিন ও সোনালী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা মেরি, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জিএম অফিসের জিএম ননী গোপাল নাথ ও মীর মহিদুর রহমান, প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, ডিএমডি মাইনুল হক, ও সফিজউদ্দিন এবং এজিএম মো. কামরুল হোসেন খান।