মস্কোর কাছে একটি কনসার্ট হলে হামলার সন্দেহে গ্রেপ্তার ৪ ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাশিয়ার একটি আদালতে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত শুক্রবার হওয়া ওই হামলায় ১৪৩ জন নিহত হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সেদিন মুখোশ পরা ৪ ব্যক্তি বন্দুক হাতে ভিড় ঠাসা ক্রোকাস সিটি হলে দর্শকদের লক্ষ্য করে প্রথমে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। তারপর পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ক্রোকাস সিটি হলে শুক্রবার একটি কনসার্টের আয়োজন হয়েছিল। গান শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে পুরো দর্শক হল যখন কানায় কানায় পূর্ণ ঠিক সে সময় হামলা চালানো হয়।
রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী এফএসবি ওই দিনই সন্দেহভাজন হামলাকারী হিসেবে একটি গাড়িতে থাকা ৪ জনকে আটক করে।
এই ৪ জন হলেন, দালেরদজন মিরজোয়েভ, সাইদাকরামি মুরোদালি রাচাবালিজোদা, শামসিদিন ফারিদুনি এবং মোহাম্মদসোবির ফায়জোভ। রবিবার তাদের মস্কোর বাসমানি জেলা আদালতে তোলা হয়।
তাদের মধ্যে ৩ জনকে মুখোশ পরা পুলিশ হাত পিচমোড়া করে ধরে হাঁটিয়ে আদালতকক্ষে নিয়ে আসে। চতুর্থ জন হুইলচেয়ারে বসে আদালত কক্ষে প্রবেশ করেন।
তাদের আদালত কক্ষে প্রবেশের ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে। ভিডিওতে তাদের সবাইকেই আহত অবস্থায় দেখা দেখে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মিরজোয়েভ ও রাচাবালিজোদার চোখ ফোলা এবং চোখের চারপাশে কালশিরা দেখা গেছে। আরেকজনের কানে মোটা ব্যান্ডেজ ছিল।
মিরজোয়েভের গলায় একটি ছেঁড়া প্লাস্টিকের ব্যাগ জড়ানো ছিল। ফারিদুনির মুখমণ্ডল খুব বাজে ভাবে ফুলে ছিল। ফায়জোভকে হুইলচেয়ারে করা আনা হয়। তার পরনে ছিল হাসপাতালের গাউন। দেখে মনে হয়েছে তার একটি চোখ নেই।
তাদের সবাইকে একটি কাঁচ ঘেরা বুথে রাখা হয়। সেসময় মুখোশ পরা পুলিশ আদালত কক্ষ পাহারা দিচ্ছিল।
আদালতের পক্ষ থেকে টেলিগ্রামে এক বার্তায় বলা হয়, ‘মিরজোয়েভ তাজিকিস্তানের নাগরিক এবং তিনি নিজের অপরাধ সম্পূর্ণরূপে স্বীকার করেছেন। রাচাবালিজোদাও নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছেন।’
শুক্রবার হামলার পরপরই দায় স্বীকার করে নিজেদের মুখপত্র আমাক থেকে টেলিগ্রামে একটি পোস্ট দিয়েছিল জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট- আইএস। পরদিন শনিবার আমাক থেকে টেলিগ্রামে এক পোস্টে সন্দেহভাজন ৪ হামলাকারীর একটি ছবি প্রকাশ করে আইএস লিখেছে, ‘ইসলামিক স্টেট এবং ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াইরত দেশগুলির মধ্যে তুমুল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই হামলাটি হয়েছে।’
তবে আইএস দায় স্বীকার করলেও রাশিয়া এ হামলার পেছনে ইউক্রেইনের যোগসূত্রিতা খোঁজার চেষ্টা করছে।
হামলায় সরাসরি জড়িত সন্দেহভাজন ৪ বন্দুকধারীসহ মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে। বলেছে, ‘চার বন্দুকধারী হামলার পর একটি গাড়িতে করে ইউক্রেইন সীমান্তের দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
যদিও ইউক্রেইন তার আগেই বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, এই হামলার সঙ্গে তাদের কোনো ধরণের সংশ্লিষ্টতা নেই। এফএসবির দাবিকে তারা ‘আরও একটি মিথ্যাচার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।