প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাল্যবিবাহ, যৌতুক ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সমন্বিত সামাজিক আন্দোলনের বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, ‘আমাদের মেয়েদের কেবল ভুক্তভোগী হিসেবে নয়, পরিবর্তনের চালিকা শক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে।’

আজ বুধবার ‘আইসিপিডি-৩০ গ্লোবাল ডায়ালগ অন ডেমোগ্রাফিক ডাইভারসিটি অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা এবং বিশ্বের স্থানান্তরিত জনসংখ্যার সুযোগগুলো অন্বেষণ করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে অনুষ্ঠানটি।

ইউএনএফপিএ’র সাথে বাংলাদেশ, বুলগেরিয়া ও জাপান যৌথভাবে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় কৈশোর স্বাস্থ্যবিষয়ক কৌশলপত্র (২০১৭-২০৩০) এবং এর বাস্তবায়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, ‘কিশোরদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে এক হাজার ২৫৩টি সেবায় কিশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কর্নার স্থাপন করেছি।’

তিনি আরো বলেন, ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত প্রায় ৫০ লাখ কিশোরীকে বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এছাড়া স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের পুষ্টি চাহিদা পূরণে সরকার দেশব্যাপী ‘স্কুল মিল’ কর্মসূচি চালু করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১০ সাল থেকে সরকার মাধ্যমিক স্তরে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিনামূল্যে বই বিতরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪৬৪ মিলিয়ন বই বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এছাড়া প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষার প্রসারে আমরা উপবৃত্তি কর্মসূচি চালু করেছি। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের পড়াশোনা বিনামূল্যে করা হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার জাতীয় বাজেটের ৩০ শতাংশ নারীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে বরাদ্দ দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বেইজিং ডিক্লারেশন অ্যান্ড প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমরা নারী উন্নয়নের জন্য একটি জাতীয় নীতি ও কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি।’

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে মোট শ্রমশক্তির ৪২ দশমিক ছয় শতাংশ নারী। এবং আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৫০ শতাংশে উন্নীত করা। আমরা ২০২৬ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে ২৫ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০২৩ অনুযায়ী রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ ১৪৬টি দেশের মধ্যে সপ্তম এবং এই অঞ্চলে প্রথম।

তিনি আরো বলেন, ‘সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আগের জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে ৩৮ দশমিক ২৪ শতাংশ।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ইউএনএফপিএ’র নির্বাহী পরিচালক ড. নাতালিয়া কানেম, মালদ্বীপের সামাজিক ও পরিবার উন্নয়ন মন্ত্রী আইশাথ শিহাম, কিরিবাতির নারী, যুব, ক্রীড়া ও সামাজিক বিষয়ক মন্ত্রী মার্টিন মোরেত্তি, জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় ভাইস মিনিস্টার ইয়াসুশি এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী রোকেয়া সুলতানা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

বুলগেরিয়া সরকারের প্রতিনিধিরাও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন।