নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা কখনো যেন হাল না ছাড়ি, বুকে বল নিয়ে চলি।

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- জাগপা’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিউল আলম প্রধানের ৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণ সভার আয়োজন করে জাগপার একাংশ।

মির্জা ফখরুল বলেন, একদলীয় বাকশাল কায়েম করতে সরকার অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এটা তাদের সুকৌশল। গনণতন্ত্রের আলখেল্লা পরে নির্বাচন নাটক দেখাচ্ছে, এটা কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। গত ১৫ বছরে যে অপকর্ম করেছে সেই ভয়েই তারা সুষ্ঠু ভোট দিতে ভয় পায়। এখন যে উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে তাতেও জনগনের সায় নেই। প্রকৃত অর্থে এর মাধ্যমে কোনো জনগণের রায়ের প্রতিফলন হচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমরা বারবার বলেছি, ক্ষমতায় যেতে চাই না, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ভোটের অধিকার চাই। এতে আওয়ামী লীগের এতো ভয় কেন। কারণ তারা যে অপকর্ম করেছে এগুলো তন্ন তন্ন করে খুঁজে বের হবে সেই ভয়ে। স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল দাবি ছিল- গণতন্ত্র, সেই চেতনা আওয়ামী লীগ ধ্বংস করেছে। এখন আবার একদলীয় শাসনের দিকে যখন আওয়ামী লীগ নিয়ে যেতে চায় তার মূল বাধা বিএনপি।

তরুন সমাজ কোথায়, দেশের এই অবস্থায় তাদের মধ্যে কি কোনো আলোড়িত করে না এমন প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অন্যকোনো পথ চিনি না, আন্দোলনের বিকল্প নেই। জনগণকে বেরিয়ে আসতে হবে। রুখে দাড়াতে হবে।

সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ পরিবারসহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় পড়ছেন এমন তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, এখানে কেস দেখানো হয়েছে, গণতন্ত্র বিনষ্ট ও দুর্নীতির দায়ে। সরকার বিরোধীদলীয় নেতা কর্মীদের দমন করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, সেনাবাহিনী, বিচার বিভাগসহ সকল প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করেছে। এমন কী সংবাদিকদের লেখার ও মত-প্রকাশের স্বাধীনতা নেই।

দুর্নীতি এমন পর্যায়ে গেছে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, দুর্নীতি আর লোপাটের সাথে যারা জড়িত তাদেরকে এই ব্যাংকগুলোর দায়িত্ব দিয়েছেন। পুরো দেশের সম্পদ লুটপাট করেছে তারা।

তিনি বলেন, সাবেক সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ -এর স্যাংশনে অনেকে খুশি হয়েছে, কিন্তু এটা আর একটা বিভ্রান্তিকর বিষয়। র‍্যাবের উপরও এ ধরনের দেয়া হয়েছে, তাতে তাদের কিছুই হয়নি, তারা তাদের অপকর্ম থামায়নি। আমার ঘর যদি নিজে সামলাতে না পারি, কেউ এসে সামলে দিবে না। নিজেদের শক্তি নিয়ে এদেরকে পরাজিত করতে হবে। উৎখাত করবো কেন? ভোটের মধ্য দিয়ে এদেরকে পরাজিত করবো। যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়।

অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সকলকে আবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারকে পরাজিত করে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবো। ইনশাআল্লাহ।

স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুব জাগপার সভাপতি মীর আমির হোসেন আমু-সহ সমমনা জোটের নেতৃবৃন্দ।