ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার কলকাতার সঞ্জীবা গার্ডেনের যে ফ্ল্যাটে গিয়েছিলেন। তাতে দেখা যায়, এমপি আনার দুজনের সঙ্গে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু জীবিত আর বের হননি। হয়েছেন খণ্ড খণ্ড হয়ে, ব্রিফকেস আর পলিথিনে। পুরো কিলিং মিশনে সবার সামনে ছিলেন শিমুল ভুঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ।

গত ১৩ মে দুপুর ২টা ৫১ মিনিটে সঞ্জীবা গার্ডেনের আলোচিত সেই ফ্ল্যাটে ঢুকেন এমপি আনার। এ সময় তার সঙ্গে থাকা দুজন হলেন শিমুল ভুঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ এবং তার সহযোগী ফয়সাল। এমপি আনার তখন তার জুতা রাখেন দরজায় রাখা র‍্যাকে। বেশ শান্তশিষ্ট ও স্বতস্ফুর্তভাবে ফ্ল্যাটে ঢুকতে দেখা যায় তাকে।

কয়েক ঘণ্টা পর বের হয়ে আসেন শিমুল ভুঁইয়া ওরফে আমানুল্লাহ, হাতে ছিল একটা লাগেজ। এরপর তার সঙ্গে পলিথিন ও কাগজের শপিং ব্যাগ হাতে বের হন আরেকজন। বের হওয়ার সময় শিমুল ভুইয়া বাইরে থেকে দরজা চাবি দিয়ে লক করে দেন। লিফট দিয়ে নেমে তারা বের হয়ে যান এমপি আনারের লাশ গুম করতে। পুরো কিলিং মিশনের নেতৃত্বে সামনে থেকেই দেখা যায় শিমুল ভূঁইয়াকে।

ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে দরজা লক করছেন শিমুল ভূঁইয়া। ব্রিফকেসে এমপি আনারের খণ্ডিত লাশ। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে এমপি আনোয়ারুল হত্যার মোটিভের বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে ঢাকা ও কলকাতার পুলিশ।

তারা জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময় চরমপন্থীদের ক্রসফায়ারসহ নানাভাবে শায়েস্তা করিয়েছে আনোয়ারুল আজিম। সেটা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছিল পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতাদের। এছাড়া, আরেকটি বড় কারণ, কলকাতায় স্বর্ণ চোরাচালালে আধিপত্য নিয়ন্ত্রণ করা। এর আগে এমপি আনারের হয়ে কাজ করতেন অভিযুক্ত আকতারুজ্জামান শাহীন। এই শাহিন আবার এমপির কাছে ৫০ কোটি টাকা পেতেন বলে জিজ্ঞাসাবাদের জানিয়েছে আসামিরা। শাহীনের সঙ্গে এ নিয়ে এমপি আনারের বিবাদ চলছিল।

আরও জানিয়েছে, পরে, এমপির কাছের মানুষ শিমুল ভুইয়াকে দিয়ে ফাঁদ পাতা হয়। এমপি আনারকে বলা হয়, কলকাতায় একজনের কাছে অনেক স্বর্ণের বারের মজুদ আছে। তার সাথে মিটিংয়ে বসতে হবে। তা বলেই কলকাতায় ডেকে নেওয়া হয় এমপি আনারকে। অন্তত পাঁচ মাস আগে শাহীন এই খুনের পরিকল্পনা করে বলে জানিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।